বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে ভেসে গেছে নির্মাণাধীন ট্যুরিজম পার্ক থেকে পূর্বদিকের ১৩০০ মিটার দীর্ঘ সড়কের এক তৃতীয়াংশ। স্থানীয়দের কাছে এটি সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের চার কোটি টাকার বাণিজ্যিক প্রকল্প নামে পরিচিত।
কোন ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা ছাড়াই সাগরের ওয়াটার লেভেল দখল করে নির্মাণ করা হয়েছিল এই ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক। ঝড়জলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সব। পড়ে আছে ধ্বংসের দগদগে ক্ষত।
কুয়াকাটা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেখা যায়, আজ দুপুরের প্রায় দুই ঘণ্টার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় ছোট বড় অন্তত সাতটি স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়েছে। এসব স্থাপনার দোকানিরা কোনোক্রমে মালামাল সরিয়ে নিয়েছেন। তবে উত্তাল ঢেউ এসে খুঁটি পাটাতন সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে।
এদিকে সৈকতের ওয়াটার লেভেলে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ আলোচিত স্থাপনা সর্দার মার্কেটের নিচতলার বালু ঢেউয়ের ঝাপটায় ভেসে গেছে। এটি ধসে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তছনছ হয়ে গেছে বালুর জিওব্যাগ। ২০–৩০ বছর ধরে দোকান করা (সাত ক্ষুদ্র দোকানি) মানুষগুলো এক অস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দুই তিন ঘণ্টার জলোচ্ছ্বাস যেন গোটা সৈকতের চেহারা বদলে দিয়েছে। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আজকের অস্বাভাবিক জোয়ারে জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে বেড়িবাঁধের বাইরের দোকানিরা নতুন শঙ্কায় পড়েছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বাসসকে বলেন, সড়কটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই স্থানীয়দের বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
তিনি ধসে যাওয়া সড়ক প্রকল্পের দুর্নীতির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে এর সাথে জড়িত সাবেক মেয়রকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলেও জানান।