২০২৪–২৫ অর্থবছরের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সারাদেশে সেরা অবস্থান অর্জন করেছে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের সমন্বিত হারে উপজেলাটির অর্জন ১১৮.৫৬ শতাংশ, যা বছরের সেরা পারফরম্যান্স।
প্রকাশিত ফলাফলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দিনাজপুরের বিরল উপজেলা, যার সমন্বিত অর্জন ১১৬.৫২ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে রয়েছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা, অর্জন ১১৫.১১ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী, মৃত্যু নিবন্ধনে শতভাগ বা তার বেশি অর্জন করেছে দেশের ৯টি উপজেলা—মির্জাগঞ্জ, দুমকি, গলাচিপা, বিরল, ধর্মপাশা, রাজারহাট, শ্রীপুর, পটুয়াখালী সদর ও গাংনী। এর মধ্যে দুমকি উপজেলায় মৃত্যু নিবন্ধনের হার ১৪১.৬৬ শতাংশ এবং জন্ম নিবন্ধনের হার ৯৫.৪৬ শতাংশ।
অন্যদিকে, জন্ম নিবন্ধনে শতভাগ বা তার বেশি অর্জন করেছে ২৩টি উপজেলা। এর মধ্যে রয়েছে বাঁশখালী, তারাগঞ্জ, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, পীরগঞ্জ, রংপুর সদর, বিরল, রাঙ্গুনিয়া, জুড়ি, বোদা, ঝিনাইগাতি, গঙ্গাচড়া, কর্ণফুলি, ধর্মপাশা, সাতকানিয়া, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, রামগঞ্জ, বড়লেখা, পীরগাছা, তেঁতুলিয়া, তাহিরপুর, সন্দীপ ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিরল উপজেলায় জন্ম নিবন্ধনের হার ১১৮.৩৬ শতাংশ এবং মৃত্যু নিবন্ধনের হার ১১৪.৬৯ শতাংশ। মির্জাগঞ্জে মৃত্যু নিবন্ধনের হার ১৭১.২৪ শতাংশ এবং জন্ম নিবন্ধনের হার ৫৮.৯৮ শতাংশ।
দুমকী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুজর মো. ইজাজুল হক বলেন, ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে বর্ষসেরা হওয়াটা দারুণ আনন্দের। এটা আমার নয়; দুমকীবাসীর সাফল্য। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক স্যার ও ডিডিএলজি স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ; তাদের নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় এটা সম্ভব হয়েছে। এ নিবন্ধন কার্যক্রমে আমি টিম লিডার হিসেবে নিয়মিত তদারকি করেছি। কৃতজ্ঞতা দুমকী উপজেলার গ্রাম পুলিশ, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান ও সদস্যদের প্রতি। তাদের কঠোর পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ সফলতা এসেছে।’
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ‘এটা অবশ্যই কৃতিত্বপূর্ণ। আমি দুমকী উপজেলার নির্বাহী অফিসারসহ জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তাদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই; তাদের সমন্বিত প্রয়াসের ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। দুমকীবাসীকেও আমি অভিনন্দন জানাই।’
তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালী বরাবরই জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে দেশের মধ্যে ভালো অবস্থানে আছে। তবে, জেলার দু–এক জায়গার জনপ্রতিনিধি বিভিন্ন অপকর্মের কারণে অপসারিত হয়েছে। সেসব জায়গা বাড়তি কাজ করতে হচ্ছে। তবে, আমরা চেষ্টা করছি কাজটাকে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিতে।’
বরিশাল অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আহসান হাবীব বলেন, ‘এতে আমি খুব খুশি। তাকে ধন্যবাদ জানাই। ইউএনও গ্রাম পুলিশ সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে নিয়মিত। তাদের জবাবদিহিতার আওতায় এনেছে। চেয়ারম্যান, সচিব দিয়ে মনিটরিং কার্যক্রম নিশ্চিত করেছেন। রুট পর্যায়ে ইউএনওর যোগাযোগ আছে। সেজন্যই এই সফলতা। এটাকে মডেল হিসেবে ধরা গেলে অন্যরাও সফল হবে।’
রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় জানায়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে এই অগ্রগতি এসেছে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ, নিবন্ধন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে। মাঠপর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ও নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ এই সাফল্যের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।