চুয়াডাঙ্গায় মাঝারি দাপদাহ বয়ে চলেছে। গরমের সময় সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করে চুয়াডাঙ্গা। গত এক সপ্তাহ জুড়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মাসে তাপমাত্রা বেড়েছে। সামনে তাপমাত্রা আরো বাড়বে বলছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
গত শীতে বেশ পরপর কয়েকদিন সর্বনিন্ম তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে চুয়াডাঙ্গা। সেসময় তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। শীতকাল শেষ হতে না হতেই গত কয়েক দিনের টানা তাপদাহে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। জেলাটিতে গরমের তীব্রতায় ছোটবড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে গা এলিয়ে দিচ্ছেন পথচারিরা। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র তাপদাহে রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। তবে খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। আবার অনেকেই জীবন–জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন।
সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। দুপুরের পর আগুন ঝরা রোদের তেজে সাধারণ মানুষের বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে।
চলমান তাপদাহের প্রভাব পড়েছে জেলার ব্যবসা বাণিজ্যে। প্রচণ্ড গরমে বাজারমুখী হচ্ছে না মানুষ। ক্রেতা সমাগম না থাকায় ঈদ বাজার এখনও জমে ওঠেনি।
কয়েকদিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তাপদহে মাঠে ভুট্টাসহ নানা ফসলে ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের। গরমে শ্রমিকের অভাবে মাঠে ভুট্টা ঝলসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।
এদিকে তাপদহের ভ্যাপসা গরমে ডাইরিয়া রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন অর্ধশাতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত নানা কারণে এই সময়ে শিশু ও বয়স্করা বেশী আক্রান্ত হয়। গরমের মৌসুমের এই সময়ে শিশুদের প্রতি বাড়তি নজর দেবার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ভৌগোলিক কারণে হিমালয় থেকে আসা হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা জানান দেয়। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার খুব কাছে কর্কটক্রান্তি রেখা, যার কারণে শীতের সময় শীত বেশি, আর গরমের সময় গরম। এবছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে এই তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রখর এই তাপদহ থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির বৃষ্টির আশায় বুক বেধে আছে জেলার মানুষ।
এফএম/দীপ্ত সংবাদ