গাজা সিটির পূর্ণ দখল নিতে আরও এক দফা জোরালো হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সচল থাকা দুটি হাসপাতালের কাছে ওই হামলায় অন্তত ১৮ ফিলিস্তিনি নিহত হন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার প্রাণ হারান অন্তত ৮৩ জন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গাজায় বর্তমানে অন্তত ২৬ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গাজার যতদূর দৃষ্টি যায় সবটা জুড়েই ইসরায়েলি বাহিনীর ধ্বংসলীলার চিহ্ন। এতে শিশু–নারী কিংবা বৃদ্ধ প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সারি।
জায়নবাদীদের এই বর্বরতা প্রতিদিনই নতুন মাত্রা পাচ্ছে। এরইমধ্যে গাজা সিটি খালি করতে ইসরায়েলি ট্যাংক তিন দিক থেকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। বাস্তুভিটা ছাড়তে ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন একটি রুট ৪৮ ঘণ্টার জন্য খুলে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না হাসপাতালগুলো। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তেমনি এক হামলা হয় কিছুটা সচল থাকা আল–শিফা এবং আল–আহলি হাসপাতালের আশপাশে। ইসরায়েলি মিসাইলের আঘাতে দুই স্থানে প্রাণ যায় ১৮ জনের। জাতিসংঘ বলছে, এ ধরণের হামলা গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে গুড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যেই করা হচ্ছে।
এমন অবস্থায় ইসরায়েল মুখে যুদ্ধবিরতি নিয়ে নানা শর্তের কথা বললেও কার্যত এর কোনো লক্ষণ নেই। উল্টো ফিলিস্তিনিদের উৎখাত শেষে গাজা কীভাবে ভাগাভাগি হবে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী। গাজা উপত্যকাকে আবাসন খনি হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
বর্তমানে বর্বরতার রূপ এতটাই ছাড়িয়ে গেছে যে এখন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারও নেতানিয়াহুর সমালোচনা করছেন প্রকাশ্যে। এবার গাজায় চলমান ইসরায়েলের আগ্রাসনকে সরাসরি গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। একইসঙ্গে ইসরায়েলকে সহায়তা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানান তিনি।
জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে বলছে, গাজা উপত্যকায় অন্তত ২৬ হাজারের মতো শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। এর মধ্যে শুধু গাজা নগরীতে এই সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের দক্ষিণ গাজার আল–মাওয়াসি এলাকার মুখপাত্র বলেন, আগস্টে গাজায় প্রতি আট শিশুর মধ্যে একজন মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ হার।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া বহু মরদেহ ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করাই সম্ভব হয়নি।