গাজায় খুব শিগগিরই একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যে যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, এটা খুব তাড়াতাড়িই ঘটতে যাচ্ছে। আর গাজার পরিস্থিতি এখন খুব ভালোভাবে এগোচ্ছে। তিনি আরও জানান, খুব শক্তিশালী কিছু দেশ এই মিশনে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যাতে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে কোনো জটিলতা দেখা দিলে তারা হস্তক্ষেপ করতে পারে। যদিও হামাস এখনো নিরস্ত্র হওয়ার বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) দুই বছরের জন্য একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর ম্যান্ডেট অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। এই বাহিনীর দায়িত্ব হবে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেয়া, সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়া।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গাজায় যেকোনো স্থিতিশীলতা বাহিনীকে অবশ্যই পূর্ণ আন্তর্জাতিক বৈধতা নিয়ে কাজ করতে হবে, যাতে তা ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করতে পারে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত এই খসড়াটি ইউএনএসসির ১০ নির্বাচিত সদস্য ও কয়েকটি আঞ্চলিক অংশীদারের কাছে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। মিশর, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও তুরস্ক ইতোমধ্যে প্রস্তাবনাটি দেখেছে। এতে বলা হয়েছে, প্রায় ২০ হাজার সদস্যের এই স্থিতিশীলতা বাহিনী প্রয়োজনে বলপ্রয়োগেরও অনুমতি পাবে।
ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হামাসের নিরস্ত্রীকরণ। যদিও এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি, তবুও এই বাহিনীর একটি দায়িত্ব হবে হামাসের সামরিক সক্ষমতা ও ‘আক্রমণাত্মক অবকাঠামো’ ধ্বংস করা এবং তা পুনর্গঠিত হতে না দেওয়া।
এই পরিকল্পনার ফলেই ১০ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। তবে ইসরায়েল বারবার সেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে।
তুরস্ক এই শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশটি হামাসকে শান্তি প্রস্তাব গ্রহণে উৎসাহিত করেছে এবং স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনের পক্ষে সমর্থন আদায়ে কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ইস্তাম্বুলে বৈঠক করেছে।
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার স্পষ্ট জানিয়েছেন, গাজায় তারা কোনো তুর্কি উপস্থিতি মেনে নেবেন না।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান গত মাসে গাজা সফরকালে জানান, কোনো মার্কিন সেনা সেখানে মোতায়েন করা হবে না।
সূত্র: আল–জাজিরা