ইন্দোনেশিয়ায় টানা ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১৬ তে পৌঁছেছে। সুমাত্রা ও আচেহ প্রদেশজুড়ে বিধ্বংসী এই দুর্যোগে এখনো অন্তত ২৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য উদ্ধৃত করে এ খবর জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
আচেহ প্রদেশের তামিয়াং জেলায় কয়েক হাজার মানুষ এখনো খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও জরুরি পণ্যের তীব্র সংকটে ভুগছে। রাস্তা–ঘাট ভেঙে পড়ায় প্রত্যন্ত এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যায় আটকে পড়া একটি ইসলামি আবাসিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন সপ্তাহখানেক ধরে হোস্টেলে আটকা থেকে পানির সংকটে বন্যার পানি পান করতেও বাধ্য হচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সহায়তা কেন্দ্র থেকে খাবার ও পানি আনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে ত্রাণ পৌঁছাতেও হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবাও সুবিয়ান্তো দাবি করেছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং সরকারের প্রস্তুতি যথাযথ। তবে সুমাত্রা ও আচেহ প্রাদেশিক প্রশাসন এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়। তারা দ্রুত জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও কেন্দ্রীয় সরকারের বাড়তি সহায়তা চেয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, বন উজাড়, অবৈধ খনি খনন এবং পরিবেশ ধ্বংসের ফলে বন্যা–ভূমিধস আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তারা নর্থ সুমাত্রা হাইড্রো এনার্জি এবং স্বর্ণ খনির প্রতিষ্ঠান এগিনকোর্ট রিসোর্সেসসহ কয়েকটি চীনা অর্থায়নপুষ্ট কোম্পানিকে দায়ী করছে। তবে এসব কোম্পানি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ঘূর্ণিঝড় সেনিয়া এবং একাধিক মৌসুমি ঝড়ের প্রভাবে যে বন্যা শুরু হয়েছিল, তা এখন ইন্দোনেশিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহতম দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।