নির্ধারিত সময়ে অস্ত্র জমা দেয়নি নারায়ণগঞ্জ–৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও তার ছেলে–ভাই–ভাতিজা। গত ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছিলেন তারা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও নারায়ণগঞ্জ জেলায় অন্তত ৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়েনি। এরমধ্যে শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছেই রয়েছে অন্তত আটটি আগ্নেয়াস্ত্র। এসব অস্ত্র অবৈধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
অস্ত্র জমা না দেওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন শামীম ওসমান, তার ভাই সেলিম ওসমান, ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন ও শ্যালক তানভীর আহম্মেদ টিটু। অস্ত্র জমা না দেওয়ার তালিকায় নাম রয়েছে এই আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরীরও।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৮ অক্টোবর শামীম ওসমানের নামে পয়েন্ট ২২ বোরের একটি রাইফেলের লাইসেন্স দেওয়া হয়। তিনি এই রাইফেলের লাইসেন্স একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর নবায়নও করেছেন। গত বছরের ২৬ অক্টোবর একটি এনপিবি পিস্তলের লাইসেন্স নেন তিনি। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণার পর বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে তিনি অস্ত্র দুটি জমা দেননি। সেই কারণে তার অস্ত্র দুটি অবৈধ হিসেবে বর্তমানে জেলা প্রশাসনের তালিকায় তালিকাভুক্ত হয়েছে।
তার ভাই নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানও তার আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেননি। ২০২০ সালের ১ মার্চ তার নামে একটি পিস্তল ইস্যু করা হয়। তার নামে ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আরেকটি পিস্তলের লাইসেন্সও দেওয়া হয়। সেটিও তিনি জমা দেননি।
শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন এখনো তার শটগানটি জমা দেননি।
তার শ্যালক ও বিসিবির সাবেক পরিচালক তানভীর আহম্মেদ টিটুর নামে ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর পয়েন্ট ২২ বোরের একটি রাইফেলের লাইসেন্স দেওয়া হয়। গত বছরের ৫ নভেম্বর পয়েন্ট ২২ বোরের একটি এনপিবি পিস্তলেরও লাইসেন্স পান তিনি। অস্ত্র দুটি তিনি এখনো জমা দেননি।
শামীম ওসমানের বেয়াই (ছেলের শ্বশুর) ফয়েজউদ্দিন আহমেদ লাভলুও তার লাইসেন্সপ্রাপ্ত শটগানটি এখনও জমা দেননি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৭৩৭টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার মেয়াদে মোট ৩২১টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে দেওয়া ১৯১টি অস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ১০২টি শটগান ও বন্দুক, ৬৭টি পিস্তল, ১৪টি রাইফেল ও আটটি রিভলভার। সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে জেলার বিভিন্ন থানায় ১৩৬টি অস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এখনো ৫৫টি অস্ত্র জমা পড়েনি।
এসএ/দীপ্ত সংবাদ