নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ–সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের বিরুদ্ধে তার পরিবর্তে স্বামীকে দিয়ে নিয়মিত অফিস করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.আইয়ুব আলী নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ৪ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের এই লাইভ ভিডিও ধারণ করেন।
অভিযুক্ত লিখি মজুমদার উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ–সহকারী কর্মকর্তা। তার স্বামীর নাম ভবরঞ্জন মজুমদার। তিনি পেশায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ কর্মকর্তা। এই দম্পতি উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের প্রসন্ন পন্ডিত বাড়ির বাসিন্দা।
ভিডিওতে দেখা যায়, মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো.আইয়ুব আলী ইউনিয়নের মুছাপুর ভূমি উপ–সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের স্বামীকে তার চেয়ারের পাশের চেয়ারে বসে কাজ করতে দেখে অফিসে ঢুকে প্রথমে তাকে তার নাম জিজ্ঞেস করে। তখন তিনি জানান, তিনি ভবরঞ্জন মজুমদার। মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ–সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের স্বামী। এরপর চেয়ারম্যান তাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি এখানে কেন আসছেন। তখন তিনি চেয়ারম্যানকে জানান তিনি অনলাইনে কাজ করছেন।
এ সময় চেয়ারম্যান লাইভে অভিযোগ করেন, লিখি মজুমদার তার কর্মস্থলে থাকেন না। এখানে তার স্বামী মানুষের কাজ করে তাদের সেবা দেয়। ওই লাইভে চেয়ারম্যান প্রশ্ন রাখেন, সরকারের কি এমন কোন নীতিমালা আছে যে কর্মকর্তা অফিসে না থাকলে তার স্বামী অফিস করবে।
লাইভে আরও দেখা যায়, ভবরঞ্জন মজুমদার স্বীকার করে তিনি তার স্ত্রীর পরিবর্তে কাজ করছেন। তাৎক্ষণিক চেয়ারম্যান এই অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিকার চান উপজেলা ও জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে। ওই সময় সেবা প্রার্থী একাধিক ব্যক্তি জানান তিনি তার স্ত্রীর পরিবর্তে মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ–সহকারীর কাজ করছেন।
এ বিষয়ে জাইতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি উপ–সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদার বলেন, তার স্বামী তাকে প্রত্যেক দিন সকালে অফিসে দিয়ে আসে এবং বিকালে নিয়ে যায়। সেদিন তিনি অফিসের কাজে একটি তদন্তে বাহিরে যান। এজন্য তার স্বামী সেখানে বসে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এখন কি বুঝে চেয়ারম্যান লাইভ করেছে, আমিতো ছিলাম না বলতে পারবনা। আমার সাথে কি ওনার শক্রতা আমি বুঝতে পারছিনা।‘
মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো.আইয়ুব আলী বলেন, লিখি মজুমদারের স্বামী প্রত্যেক দিন এখানে তার স্ত্রীর পরিবর্তে অফিস করে। সে বিষয়টি লাইভে স্বীকার করে। লিখি মজুমদার বুধবার অফিসে আসেনি। তার তদন্তে যাওয়ার কথাটি মিথ্যা–বানোয়াট।
মুছাপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি জানেন। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) একদিন অফিস পরিদর্শনে এসে উপ–সহকারী কর্মকর্তা লিখি মজুমদারের স্বামীকে অফিসে কাজ করতে দেখেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি তাদের ডেকেছি। অভিযোগ চেয়ারম্যান করতেই পারে। তবে এ ঘটনায় কেউ লিখিত কোন অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ.এস.এম.নাসিম/আফ/দীপ্ত নিউজ