আপনাকে যদি বলা হয় ৮০ বছরের বেশি কোনো প্রবীণের কথা ভাবুন। আপনার চোখে কী ভাসবে? একজন বয়োজৈষ্ঠ ব্যক্তি। বয়সের ভারে নূইয়ে পড়েছেন। হয়ত হাটা চলা করতে পারেন না। নানা রোগে শোকে জর্জরিত। আমাদের দাদা-নানাদের ছবি হয়তো চোখে ভাসবে।
যদি বলা হয়, ভাবুন তো এমন একজন প্রবীন একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মঞ্চে নৃত্য করছেন। আপনি হয়তো ভাবতে পারবেন না। গত শুক্রবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসে। আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ট্যাঙ্গো বিশ্বকাপের মঞ্চে নেচেছেন ৮১ বছর বয়সের এক ব্যক্তি। নাম জর্জ নেইডো। বয়স আশি পেরোলেও তার ট্যাঙ্গো নাচ দেখে, কারো বোঝার উপায় ছিল না তার বয়স আশি পেরিয়েছে। নেইডোর নৃত্য সঙ্গী লরা ক্রিস্টিনা বেকসান তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আমি প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখছি, যা একই সাথে আমার জন্য আনন্দের ও গর্বের। নেইডোর সাথে নাচ করার অভিজ্ঞতা একদমই আলাদা।”
এখানেই গল্প শেষ হয়ে যায়নি। ৩ মাস আগে তার কোমড়ের অপারেশন হয়। কৃত্তিম যন্ত্র বসানো হয় তার কোমড়ে। এ অবস্থাতেই উসাইনা ডেলে ট্যাঙ্গো নাচে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এবং সবচেয়ে বয়স্ক অংশগ্রহণকারী হিসেবে নিজের নাম লেখান জর্জ নেইডো।
ট্যাঙ্গো নাচের বৈশিষ্ঠ হলো, কাঠের তৈরি মেঝেতে উঁচু জুতা পরে জুটি বেধে নাচা। অনেকটা যুগল নৃত্য বললে ভুল হবে না। জর্জ নেইডো বলেন, “নাচ আমার শরীর ও মনকে শীতল করে। এমনকি এমন পরিবেশ আমার ভালো লাগে। এটি সম্মানজনক এবং স্বাস্থ্যকর। যা আমি উপভোগ করি।” তিনি আরো বলেন, “আমি যখন লোকদের আমার বয়স বলি, তারা বিশ্বাস করে না। তারা বলে, এটা হতে পারে না। তারা জানতে চান, আমি কতটা ভালো আছি। আমি কাঠের উপর ঠক ঠক করি এবং আমি যা করতে পারছি তার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই”।
জর্জ নেইডো শুধু ট্যাঙ্গো বিশ্বকাপে নাচেননি। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা। মনের জোর আর ইচ্ছা থাকলে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জীবনকে উপভোগ করা যায়।