রাঙামাটি সদর উপজেলার বসন্ত পাংখোয়া পাড়ায় বড়দিন উৎসবের অনুষ্ঠানে গিয়ে এক চাকমা তরুণীর ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যকার সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর তরুণীর স্বজন।
তরুণীর স্বজনের দেওয়া তথ্য মতে, গতকাল রোববার পাংখোয়া জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের অনুষ্ঠান দেখতে সদর উপজেলার বসন্ত পাংখোয়া পাড়ায় গিয়েছিল দুই চাকমা তরুণী। তারা দুজন সম্পর্কে পিসি ও ভাইয়ের মেয়ে। রাতে চারজন যুবক তার মেয়ে ও মামাতো বোনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। পরে তার মামাতো বোনকে চার যুবকের মধ্যে একজন ধর্ষণ করে।
ধর্ষণের ঘটনাটি সদর উপজেলায় ঘটলেও ভিকটিম ও ঘটনায় অভিযুক্ত চার যুবক জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। ধর্ষণের শিকার তরুণীর বয়স ১৮ বছর আর আরেক তরুণীর বয়স ১৬ বছর জানিয়েছেন এই ব্যক্তি।
তিনি আরও জানান, আজ স্থানীয় কার্বারি রাজেশ কার্বারি আমার মেয়ে ও মামাতো বোনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। আমার মেয়ে ও বোন জানিয়েছে, মেয়েকে ধর্ষণ না করলেও মামাতো বোনকে ধর্ষণ করেছে একজন। তিনজন সহযোগির ভূমিকায় ছিল। আপাতত স্থানীয় কার্বারির মাধ্যমে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চাই।
তবে বনযোগীছড়া ইউনিয়নের স্থানীয় যে কার্বারি ও নিজে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন; সেই রাজেশ কার্বারির মুখে ভিন্ন সুর। রাজেশ জানান, ‘আমি ভুক্তভোগীদের পরিবার ও তাদের ফোনে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে একজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে আর আরেকজনের হাতাহাতি হয়েছে, ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে।‘
জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ চাকমা জানান, ভাইস চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ধর্ষণের শিকার মেয়ে ঘটনা স্বীকার করেছে এবং তাদের পরিবারও জড়িতদের শাস্তি চান। আমরা থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি। ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্তরা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যেন আইনের আশ্রয় নেওয়া হয়।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা জানান, আমরাও ঘটনা শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলের দিকে গিয়েছি।
এদিকে, জুরাছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল সালাম জানান, ‘ভাইস চেয়ারম্যান আমাদের ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলেছি। তবে ভিকটিম ও তাদের পরিবার থানায় আসেনি। জানতে পেরেছি আগামীকাল সকালের দিকে তারা জেলা সদরের দিকে যেতে পারেন। যেহেতু যে জায়গায় ধর্ষণের খবর পাওয়া গেছে; সেটি সদর উপজেলায় পড়েছে। তাই সদরের দিকে যেতে পারেন।
আরও পড়ুন: আজ ‘শুভ বড়দিন’
মিশু দে/ আল/ দীপ্ত সংবাদ