মৌসুমী ভিক্ষুকে ছেয়ে গেছে ফেনী শহরের অলি–গলি। মসজিদের সামনে, হোটেল রেস্তোরার সামনে, সড়কের মোড়, বিপণী বিতানের সামনে অবস্থান নেয় তারা। ট্রেনে করে এসব ভিক্ষুক আসে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও লাকসাম থেকে। শপিং মল থেকে কেনাকাটা করে বের হলে তারা ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় স্থানীয় ভিক্ষুকের সংখ্যা প্রায় ১৯০০। জেলায় পূর্ণবাসন করা হয়েছে ৪০০ ভিক্ষুককে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এবং রমজানকে কেন্দ্র করে শহরে ভিক্ষুকদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, শহরের ট্রাংক রোডের দোয়েল চত্বর, খেজুর চত্বর, রাজাঝির দিঘীর পাড়, বড় মসজিদ, জহিরিয়া মসজিদ, সিএনজি স্ট্যান্ড, মহিপাল বাসস্ট্যান্ড, ফেনী রেল স্টেশনসহ সর্বত্র রয়েছে ভিক্ষুকদের আনাগোনা। রিকশা বা সিএনজি থেকে নামলেই একদল ভিক্ষুক এসে ঘিরে ধরে সাধারণ মানুষদের।
দেখা গেছে, মহিপাল বাসস্ট্যান্ডে একের পর এক ভিক্ষুক বাসে উঠে ব্যাকুল হয়ে ভিক্ষা চাইতে থাকেন। যাত্রী টাকা না দেওয়া পর্যন্ত ছাড়তে চায় না তারা। জনসমাগম আছে এমন প্রায় প্রতিটি স্থানেই দেখা যায় ভিক্ষুকের আধিক্য। অনেকের কাছে রীতিমতো উৎপাত হয়ে দাঁড়িয়েছে এরা। ভিক্ষা চাইতে গিয়ে অনেকেই পিছু ছাড়তে নারাজ। ভিক্ষুকদের মধ্যে নারী, পুরুষ ছাড়াও রয়েছে শিশুরা।
বেশ কয়েকজন ভিক্ষুকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভাসমান এসব ভিক্ষুকদের বেশিরভাগ আসে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, লাকসাম এলাকা থেকে। সকালের ট্রেনে করে ফেনী স্টেশনে নেমে শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন তারা। সারাদিন ভিক্ষা করে বিকালের ট্রেনে চড়ে বাড়ি ফিলেন তারা।
ফেনী রেলওয়ে স্টেশনের খোকন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ভিক্ষুকরা লাকসাম, নাঙ্গলকোট, চট্টগ্রাম থেকে তারা সকাল ৭–৮টার মেঘনা, চট্টলা ট্রেনে করে আসে এবং ভিক্ষা করে বিকাল ৪–৫ ট্রেনগুলো করে চলে যায় ।
নুপুর নামের আরেক ব্যবসায়ী জানান, সকালে অনেক ভিক্ষুকদের ট্রেনে করে ফেনীতে আসতে দেখা যায়। অন্ধ, বৃদ্ধ ভিক্ষুকদের পাশাপাশি যাদের কাজ করার ক্ষমতা আছে তারাও ভিক্ষাবৃত্তি করতে আসে ।
শহরের ট্রাংক রোডে ভিক্ষারত অবস্থায় আব্দুর রশিদ নামে এক ভিক্ষুক জানায়, তার বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট। নিজ শহরে ভিক্ষা করতে লজ্জা পাওয়ায় নাঙ্গলকোট থেকে ফেনীতে আসেন ভিক্ষা করার জন্য।
আফ/দীপ্ত সংবাদ