ফেনীতে চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা জুড়ে মাঠে মাঠে চলছে এখন ধান কাটার উৎসব। কৃষক ও মৌসুমী ধান কাটার শ্রমিকদের পদচারণায় মুখর ধানের মাঠ। ফেনী জেলার ছয় উপজেলায় এবার রোপা আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে।
একদিকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ অন্যদিকে ধানের ফলন হয়েছে বাম্পার। তবুও উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় মন ভালো নেই কৃষকদের। জেলার একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলায় এবার ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান ও চাল উৎপাদন হবে আশা কৃষককের। তবে আগের চেয়ে শ্রমিকের মজুরি ও চাষাবাদ খরচ খরচ বেড়ে গেছে অনেক বেশি। ফলে কৃষকরা ধান ও চালের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। জেলায় মাঠ থেকে কৃষকেরা প্রতিমণ ধান বিক্রি করছে ১ হাজার থেকে ১১‘শ টাকায়। খাদ্য গুদামে প্রতি মন ধান কেনা হচ্ছে ১ হাজার ২শ টাকা করে।
কৃষক হোসেন মিয়া বলেন, এবার আমন ধান করেছি বীজতলা থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। ফলন ভালো হয়েছে সত্য তবে ব্যয়ের সাথে আয়ের হিসাব মিলছে না। এক কেজি গরুর গোশত কিনতে হলে একমন ধান বিক্রি করতে হবে। তাহলে আমরা খাব কি চলবো কিভাবে।
আরেক প্রান্তিক কৃষক আবু তাহের বলেন, সারের দাম বেশি, শ্রমিকের দাম বেশি, বলতে গেলে কৃষি ক্ষেত্রে সবকিছুর দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ কিন্তু ধানের দাম তেমন একটা বাড়েনি। লোকসান দিয়ে তো আর চাষ করা সম্ভব নয়। এভাবে হলে চাষবাস ছেড়ে দিতে হবে। সরকারের দেওয়া বীজ এবং সার আমরা পাইনি অথচ এই এলাকায় আমরা প্রকৃত কৃষক।
এদিকে জেলার অনেক প্রান্তিক কৃষকদের অভিযোগ– সরকারের দেওয়া সার ও বীজ সঠিকভাবে পাইনি তারা। সরকার কৃষকদের জন্য সার ও বীজ দিলেও জনপ্রতিনিধিরা তা সঠিক ভাবে বন্টন করেনি প্রকৃত কৃষকদের মাঝে।
ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক একরাম উদ্দিন বলেন, ফেনীতে এবার আমন ধান কাটা শুরু করেছে প্রান্তিক কৃষকরা। ইতিমধ্যে ৩০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। আমনের এমন বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকদের কারণ খরচের সাথে মিলছেনা উৎপাদনের হিসেব।
আবদুল্লাহ মামুন/ আল/ দীপ্ত সংবাদ