মেহেরপুর পৌরসভার কাউন্সিলার ও যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান রিপন হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাসুদ রানাকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে গাংনী থানা পুলিশ।
সোমবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাতে ফরিদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ রানা গাংনী উপজেলার থানাপাড়ার সেকেন্দার আলী ছেলে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, যুবলীগ নেতা রিপন হত্যা মামলার যাবতজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাসুদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, বোমাবাজি, মানুষ হত্যা ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল আছে। আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা অনুযায়ী গেল রাতে ফরিদপুরে অভিযান চালিয়ে মাসুদকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) তাকে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্যঃ ২০১১ সালে ১ এপ্রিল মেহেরপুর শহরের হোটেলবাজারে যুবলীগ নেতা রিপনের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তরা বোমা হামলা চালায়। এ সময় প্যানেল মেয়রসহ চারজন আহত হন। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ এপ্রিল রিপন মারা যান। এ ঘটনায় নিহত রিপনের বাবা আবদুল হালিম ঘটনার পরের দিন সদর থানায় বাদী হয়ে মেহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু ও সাবেক প্রয়াত কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামনু বিপুলের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ১৫–২০ জনকে আসামি করে হত্যা ও বোমা হামলার দুটি মামলা দায়ের করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মেহেরপুর শহরের গোরস্থানপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে রাশিদুল ইসলাম ওরফে আকালি, হোটেল বাজার পাড়ার ইসাহাক আলীর ছেলে আব্দুল হালিম, গাংনী থানাপাড়ার সেকেন্দার আলীর ছেলে মাসুদ রানা ও গাংনী উপজেলার ওলিনগর গ্রামের আরশেদ আলীর ছেলে মো. লাল্টু।
পুলিশ তদন্তে সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। এতে বাদি নারাজী আবেদন করলে মামলাটি আদালতের আদেশে সিআইডি তদন্ত করে একই রকম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ তদন্তের পর ২০১৪ সালে সিআইডির এসআই সবুজ এই মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন।
হত্যা মামলার প্রধান আসামি মামুন বিপুল ২০১৪ সালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। পরে আদালত ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মেহেরপুরের অতিরিক্ত দায়রা ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ও একই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড এ আদেশ দেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক এবং আসামিপক্ষে মনিরুজ্জামান আইনজীবীর দায়িত্বপালন করেন।
জাকির হোসেন/শায়লা/দীপ্ত নিউজ