দেশের উত্তর জনপদ বিশেষ করে রংপুর অঞ্চলের গ্রামীণ জীবনকে উপজীব্য করে কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ–দুঃখ, হাসি–কান্নায় আবর্তিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’।
গণ–অর্থায়নে নির্মিত জনপ্রিয় ৯৭ মিনিটে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ আগামী শুক্র ও শনিবার ১৬ ও ১৭ জুন দুইদিন সন্ধ্যা ৬টা ও রাত ৮টায় নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রর্দশিত হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী কালচারাল অফিসার কে.এম আরিফুজ্জামান। তিনি জানান, রংপুর অঞ্চলের গ্রামীণ জীবনকে উপজীব্য করে গণ–অর্থায়নে নির্মিত জনপ্রিয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সাঁতাও’ চারটি শো’য়ে দেখানো হবে। ১৬ ও ১৭ জুন সন্ধ্যা ৬টা ও রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিময়ে ছবিটির চারটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রটি দেখার জন্য টিকিট পাওয়া যাবে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমিতে। টিকিকের মূল্য ৫০টাকা।
‘সাঁতাও গণ–অর্থায়নে নির্মিত একটি স্বাধীন ধারার চলচ্চিত্র। দেশের উত্তর জনপদ বিশেষ করে রংপুর অঞ্চলের গ্রামীণ জীবনকে উপজীব্য করে নির্মিত এই সিনেমাটি। কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সার্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ–দুঃখ, হাসি–কান্না ফুটে উঠেছে এ চলচ্চিত্রে। এর নির্মাতা খন্দকার সুমন। চলচ্চিত্রটি ইতোমধ্যেই দর্শক ও সমালোচক মহলে নন্দিত হয়েছে।
তিস্তা বাজার এলাকায় সুমনের বেড়ে ওঠা। তার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ অঞ্চলের মানুষগুলো। ‘সাঁতাও’ একটি রংপুরি শব্দ। সাঁতাওয়ের প্রচলিত অর্থ মূলত সাতদিন ধরে বৃষ্টি। এ সিনেমায় তিনি তুলে ধরেছেন, তিস্তার পারের মানুষের সংগ্রাম। কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সর্বজনীন রূপ এবং সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ–দুঃখ, হাসি–কান্নায় আবর্তিত হয়েছে সাঁতাওয়ের কাহিনী। সাঁতাওয়ের মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল ও ফজলুল হক। এর অন্যান্য চরিত্রে আছেন আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, মো. সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, কামরুজ্জামানসহ অনেকে। এছাড়া লালমনিরহাট ও নীলফামারীর তিস্তার এলাকাবাসীদের দেখা যাবে এ সিনেমায়।
২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এ সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছিল। পরবর্তী বছর মুক্তির কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে তা থেমে যায়। চলতি বছর (২০২৩) ২৭ জানুয়ারী সিনেমাটি সেন্সরবোর্ডে মুক্তি পায়।
ছবিটি কয়েকটি সিনেমা হলে মুক্তি পেলেও কিছুদিন পরেই নানা অজুহাতে হল থেকে ছবিটি নামিয়ে দেওয়া হয় বলে পরিচালক খন্দকার সুমন অভিযোগ করে জানান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিকল্প ভেন্যুতে ছবিটির প্রদর্শনী আয়োজনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
নির্মাতা খন্দকার সুমন বলেন, আমি দেখেছি এর আগে প্যারালাল ফিল্ম বা জীবনমুখী সিনেমার ঢালাও প্রচারণার কারণে যারা সিনেমাটির দর্শক নয়, তারাও দেখতে আসে। পরবর্তী সময়ে সিনেমাগুলো তাদের ভাবনা অনুযায়ী না হওয়ার কারণে তারা ভাবেন, তারা প্রতারিত হয়েছেন। সব চলচ্চিত্র কিন্তু সবার জন্য নয়। চলচ্চিত্র, গান, কবিতা এসব কিছুর দর্শক–শ্রোতা ভিন্ন হয়ে থাকে। সিনেমা যখন হলে যায়, তখন সেটা একটা পণ্য, যেটা সঠিক ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্যই প্রচারণা। এ ভাবনা থেকেই আমার মাথায় আসে ফিমেটিক প্রচারণার বিষয়টি। সাঁতাওয়ের বিষয়বস্তু আর ভাবনা দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতেই আমরা এভাবে প্রচারণা করেছি।
দর্শক যেন তাদের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত হতে পারে। সব মিলিয়ে আমরা নয়টি কনটেন্ট করেছি সাঁতাও নিয়ে। কিছু টিশার্ট বিক্রি করেছি এ সিনেমার। ওখান থেকে যে অর্থ অর্জন করেছি, সেটা দিয়েই এ কনটেন্টগুলো তৈরি করেছি আমরা। এটাও দারুণ একটা অভিজ্ঞতা ছিল আমাদের জন্য।
ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন/আল /দীপ্ত সংবাদ