ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বগুড়া স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠনের দুটি গ্রুপ পাল্টাপাল্টি ‘আলুঘাটি’ উৎসবের ঘোষণা দিয়েছে, যা ক্যাম্পাসে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
সংগঠনটির এক পক্ষ ৫ ফেব্রুয়ারি বটতলায় এবং অপর পক্ষ ৮ ফেব্রুয়ারি টিএসসিতে উৎসব আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। উভয় পক্ষই নিজেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট দাবি করছে। তবে ৮ ফেব্রুয়ারির দিনটিতে ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, সাবেক শিক্ষার্থীরা বগুড়া স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নাম ব্যবহার করে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। একই সংগঠনের দুটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে আলাদা আলাদা ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়েছে, যা ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি হুমকি–ধমকির ঘটনাও ঘটছে।
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পক্ষের আয়োজক ও ঢাবি ছাত্রদলের যোগাযোগ সম্পাদক জুবায়ের আলী অভিযোগ করেন, একটি পক্ষ সমিতির নাম ব্যবহার করে উৎসবের নামে চাঁদাবাজি করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রচারণার ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে এবং আমাদের কর্মীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। যারা এই উৎসব করছে, তাদের বেশিরভাগই দীর্ঘদিন আগে ক্যাম্পাস ছেড়েছে।
অন্যদিকে, অপর গ্রুপের অন্যতম আয়োজক সাফিউল আলম বলেন, ‘নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সংগঠনটি স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়ন্ত্রণে, তাই আমরা আলাদা উৎসব করছি।‘
অন্যদের পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, উভয় পক্ষের সদস্যরাই একে অপরের প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারবেন।
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আয়োজকদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বধর্মতত্ত্ব বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জুবায়ের আলী, সংস্কৃত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শিপন মিয়া, অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রবিউল, সমাজকল্যাণ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন ও খাতিজাতুল কুবরা নিশী।
অপর গ্রুপের অন্যতম আয়োজকরা হলেন– ২০০৫–২০০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সাবেক ঝুট ব্যবসায়ী সাফিউল আলম, ২০০৭–২০০৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ–সভাপতি আনোয়ার পারভেজ, ২০০৯–১০ সেশনের ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রনি, আইইআর বিভাগের ২০১০–১১ সেশনের শিক্ষার্থী ও যাকাত ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আল মামুন ইলিয়াস, ২০১০–১১ সেশনের জিল্লুর রহমান, ১১–১২ সেশনের লাফি, ২০১১–১২ সেশনের সুলতান আহমেদ (আইন বিভাগ), জাহিদ হাসান শাকিল (মুজিব হল), মাহমুদ ইসলাম কাজল (জিয়া হল), ১২–১৩ সেশনের মোসাদ্দেক রহমান সৌরভ।
এ বিষয়ে ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, ক্যাম্পাসে এই ধরনের কোনো কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। যেকোনো বিশৃঙ্খলা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
ভিসির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে প্রক্টর জানিয়েছেন, ঢাবিতে অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কর্মসূচি করতে দেয়া হবে না।