পবিত্র ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে লাভের আশায় প্রায় ২ শতাধিক গরু লালন পালন করে আসছিলেন নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের জাহেরুল ইসলাম নামে এক খামার মালিক। কিন্তু লাভের মুখ দেখার আগেই তিনি প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
গত তিনদিনে কাঁচা ঘাস খেয়ে দুটি গাভী, দুটি বাছুর ও ষাঁড় গরুসহ পর্যায়ক্রমে মারা গেছে তার খামারের ২৭টি গরু। এতে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জাহেরুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে তিনি যথারীতি তার খামারের গরুগুলোকে কাঁচা ঘাস খেতে দেন। এরপর দিন রবিবার সকাল থেকে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরদিন সোমবার পর্যায়ক্রমে খামারের ১৩টি গরুর মৃত্যু হয়।
মারা যাওয়া ২৭টি গরুর মধ্যে দুটি গাভী ও দুটি বাছুর রয়েছে এবং অন্য সবগুলো ষাঁড় গরু।
তবে একের পর এক গরু মৃত্যু শুরু হলে খামার মালিক জাহেরুল সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করে অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু এরইমধ্যে গত মঙ্গলবার বিভিন্ন সময়ে আরও ১১টি এবং বুধবার সকালে আরও ৩টি গরু মারা যায়। খামার থাকা অন্যান্য গরুগুলোর মধ্যে আরও পাঁচটি গরু অসুস্থ রয়েছে।
ঘটনাটি জানতে পেরে জাহেরুল ইসলামের ‘তাহাযীদ এগ্রো ফার্ম‘ এ ছুটে যান নেত্রকোনা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্তকর্তারা। তারা খামার পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেন এবং তা ঢাকায় পাঠিয়েছেন বলে জানান। এছাড়া খামারটিতে তাদের একটি মেডিকেল টিম অবস্থান করছে বলেও জানায় জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
এদিকে খামারি জাহেরুল ইসলামের ২৭টি গরু মারা যাওয়ার ঘটনাটি জানাজানির পর এলাকার বিভিন্ন খামারিসহ সাধারণ কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
খামারে মোট ১০৭ টি বিভিন্ন বয়সের গরু ছিল। তারমধ্যে ১৪টিই বিক্রিযোগ্য ষাঁড় গুরু ছিল। সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ খামারি।
এ বিষয়ে পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিস্পদ কর্মকর্তা এম এম এ আব্দুল আউয়াল বলেন, নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে বৃষ্টির দিনে কাঁচা ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকার ফলে ঘাসের নাইট্রেট বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা যেতে পারে। এ ব্যাপারে খামারির সাথে মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে এবং খোঁজ খবর রাখছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
আল / দীপ্ত সংবাদ