ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা অভিযানে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নতুন করে আরও অন্তত ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৬২৫ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ চাপা পড়ে আছে, যাদের এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত (শুক্রবার রাত পর্যন্ত) মোট ৫৭ হাজার ২৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৭৩ জন।
অভিযানের প্রথম পর্যায়ে (অক্টোবর ২০২৩ থেকে জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত) গাজায় প্রাণ হারান ৫৪ হাজার ৯২৭ জন এবং আহত হন ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৭ জন। এরপর গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফা অভিযানে গত আড়াই মাসে নিহত হয়েছেন আরও ৬ হাজার ৭১০ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ২৩ হাজার ৫৮৪ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা শাসনকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।
চলমান সংঘাতের মধ্যে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। কিন্তু দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৮ মার্চ থেকে ফের অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস ক্রমবর্ধমান বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাজায় মানবিক পরিস্থিতি চরম বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে। খাবার, পানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের চরম সংকট তৈরি হয়েছে।”
মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর (যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার) পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ইসরায়েল–হামাস উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।