গত বছরের জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার পলাতক আসামী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সাত দিনের মধ্যে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলায় গ্রেপ্তার আরেক আসামী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন আজ ট্র্যাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। তবে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ট্র্যাইব্যুনালের ৩১ বিধি অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা চান।
এরপর আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল–১ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আগামী সাত দিনের মধ্যে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। সেই সাথে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৪ জুন দিন ধার্য করেন। আদালতে আজ চিফ প্রসিকিউটরের সাথে অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই–আগস্টে ছাত্র জনতার গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় অভিযুক্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫ টি অভিযোগ আনে প্রসিকিউসন।
সেদিন ট্র্যাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ–অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম–খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
আল