ঢাকার মিরনজিল্লা হরিজনপল্লীতে চার শতাধিক বছর ধরে বসবাসকারী হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষজনকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই মার্কেট তৈরির নামে তাদেরকে উচ্ছেদের চেষ্টা ও দেশব্যাপি সংখ্যালঘুদের জমি দখল, জুলুম এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
দেশব্যাপি কর্মসুচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখা শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসুচি পালন করে।
মানববন্ধন চলাকালে বাংলাদেশ হিন্দু ব্যেদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য সাবেক সাংসদ অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ, মানবাধিকার কর্মী মাধব দত্ত, মানবাধিকার কর্মী রঘুনাথ খাঁ, জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ আমিন, বাসদ নেতা নিত্যানন্দ সরকার, জাসদ নেতা, প্রফেসার ইদ্রিস আলী, জাসদ নেতা ওবায়দুস সুলতান বাবলু, সুধাংশু শেখর সরকার, সিপিবির সভাপতি আবুল হোসেন, ডাঃ প্রশান্ত, সাতক্ষীরা হরিজন পল্লীর সভাপতি বাবুলাল হেলা, সদস্য চন্দন হেলা, সুজন সরকার, গোপাল মন্ডল, সন্তোষ পাল, ডাঃ মিলন ঘোষ, অমিত ঘোষ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের বাইরে থেকে ডেকে এনে আদর করে এদেশে থাকতে দেয়া হয়েছে। আজ তারা ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসা করে দেশকে ধ্বংস করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন এদেশ স্বাধীনে অংশ নিয়েছে। অথচ হাজার বছর যাবত এদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের নিজের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশ থেকে হিন্দু শূন্য করার জন্য একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। ঢাকার মিরনজিল্লা হরিজনদের উৎখাত করে সেখানে মার্কেট বানিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হতে চান একটি মহল। পূর্ণবাসন ছাড়া মিরনজিল্লার হরিজনদের উচ্ছেদ করা যাবে না মর্মে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও এক সময়কার বিএনপি নেতা ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরশেনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ালের নেতৃত্বে গত বৃহষ্পতিবার আবারো হামলা চালিয়ে বসতবাড়ি ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। বাধা দেওয়ায় কমপক্ষে ৩০ জন হরিজনকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না।
বক্তারা সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা রথখোলা কালীমন্দিরের পাশ দিয়ে মসজিদে যাওয়া রাস্তা নির্মাণের নামে প্রতিমা বিসর্জনের পুকুর দখল করে নেওয়া, হাবাসপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জামাত নেতা খলিল গাজীর নেতৃত্বে রাতের আঁধারে হিমাদ্রি ঘোষের জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি নিমাণ, মথুরাপুরে শচীন বিশ্বাসের জায়গা থেকে রাধাগোবিন্দ প্রতিমা রাতের আঁধারে অপসারন করে জায়গা দখলের চেষ্টাসহ বেশ কিঝু সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল।
আল / দীপ্ত সংবাদ