সৌদি আরবের রিয়াদে একটি সোফা তৈরির কারখানায় আগুনে পুড়ে ৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলায়।
বুধবার (৩ জুলাই) সৌদির স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা নাগাদ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাতে ওই তিনজনের মৃত্যুর খবর পান স্বজনরা। এরপর থেকে তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
নিহতরা হলেন– আত্রাই উপজেলার তেজনন্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন(৪০), দিঘা স্কুলপাড়া গ্রামের কবেজ আলীর ছেলে শুকবর রহমান(৪০) ও শিকারপুর গ্রামের সাহাদ আলীর ছেলে এনামুল হোসেন(২৫) ।
নিহত ফারুকের ভাতিজা পিন্টু আলী জানান, দেশে থাকতে তার চাচা পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ছয় বছর আগে ধারদেনা করে সৌদি যান। কিন্তু যাওয়ার পর থেকেই সেখানে নানা সমস্যায় পড়েন। প্রায় আট মাস হলো ওই সোফা তৈরির কারখানায় কাজ নিয়েছেন। এরই মধ্যে বুধবার রাত ১০টার দিকে মোবাইলে জানতে পারেন কারখানায় আগুনে নিহত হয়েছেন ফারুক।
উপজেলার দিঘা গ্রামের নিহত শুকবর আলীর জামাই বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, তার শ্বশুর কৃষি শ্রমিক ছিলেন। আড়াই বছর আগে একমাত্র সম্বল ১১ শতক জায়গা বিক্রি করে তার সঙ্গে ধারদেনার টাকায় সৌদি আরব যান। এখন পর্যন্ত দেনার টাকা শোধ করতে পারেননি। কীভাবে শাশুড়ি, শ্যালকদের নিয়ে চলবেন তা নিয়ে ঘোর বিপাকে পড়েছেন। শুকবর আলীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
শিকারপুর গ্রামের নিহত এনামুলের চাচা জাহিদুল ইসলাম জানান, এনামুল পোশাক শ্রমিক ছিলেন। সুখের আশায় ধারদেনা করে সৌদি যান। সেখান থেকে কেবলমাত্র রোজগারের টাকায় ধারদেনা শোধ করে ইটের বাড়ি নির্মাণ করছেন। বাড়ির কাজ শেষ হলে আগামী বছর দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ খবর আসে। তখন থেকেই একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে বাবা–মা পাথর হয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। এছাড়া দূতাবাসে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। দ্রুত মরদেহ দেশে ফেরাতে সব রকম সহযোগিতা করা হবে।
এসএ/দীপ্ত সংবাদ