ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আট উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ। সাইফ–সৌম্যের রেকর্ড জুটির পরও তিনশ ছুঁতে পারলো না বাংলাদেশ।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৬ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। সৌম্য ৯১ আর সাইফ ৮০ রান করে আউট হয়েছেন। ক্যারিবীয়দের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার আকিল হোসেন ৪১ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন।
প্রথম দুই ম্যাচ শেষে ১–১ সমতা দুদলের। সিরিজ নির্ধারণে তাই শেষ ম্যাচটি পরিণত হয়েছে অলিখিত ফাইনালে। যেখানে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ সূচনা এনে দেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। আগের দুই ম্যাচে যেখানে পিচ একেবারে মন্থর ছিল, সেখানে দুজনের ব্যাটে মনে হচ্ছিল আজ পিচ একেবারে ব্যাটিং সহায়ক হয়ে গেছে। তারা যেভাবে ব্যাট করছিল তাতে বাংলাদেশের পুঁজি একটা সময় সাড়ে তিনশও আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু তাদের আউট হওয়ার পর সবকিছু যেন ফের বদলে যায়।
এদিন উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড গড়েন সাইফ ও সৌম্য। ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ২৫ ওভারের মধ্যে তারা দলকে এনে দেন ১৭৬ রান। মিরপুর শের–ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে যা বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। এর আগে ২০১৪ সালের মার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৫০ রানের জুটি গড়ে রেকর্ডটি দখলে রেখেছিলেন এনামুল হক জুনিয়র ও ইমরুল কায়েস। সব মিলিয়ে সাইফ–সৌম্যের জুটিতে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের মার্চে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের গড়া ২৯২ রানের জুটিটি বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে উদ্বোধনী এবং যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ।
তবে এদিন সাইফ ও সৌম্য সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করেন। ৭২ বলে ৬ ছক্কা ও ৬ চারের মারে ৮০ রান করে রস্টন চেজের বলে ক্যাচ তুলে দেন সাইফ। এর কিছুক্ষণ পর ৮৬ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৯১ রান করে আকিল হোসেনের বলে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। দুজনের বিদায়ের পর মন্থর হয়ে যায় বাংলাদেশের রানের গতি। দলীয় ২৩১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৪৪ বলে ২ চারের মারে ২৮ রান করে অ্যালিক অ্যাথানেজের শিকার হন তাওহীদ হৃদয়। অন্যদিকে একাধিক সুযোগ পেয়েও ফিফটি হাঁকাতে ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫৫ বলে ৩ ছক্কার মারে ৪৪ রান করে বিদায় নেন তিনি।
এরপর ৯ বলে ৬ রান করে আকিলের বলে বোল্ড হন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। এদিন ব্যর্থ ছিলেন আগের দুই ইনিংসে ঝড় তোলা রিশাদ হোসেনও। তিনি ৬ বলে ৩ রান করে সীমানার কাছে ধরা পড়েন। শেষদিকে অনেক চেষ্টা করেও দলের পুঁজিটা তিনশতে পৌঁছাতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারে ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন সোহান। ১৭ বলে ১ চারের মারে ১৭ রান করে শেষ বলে আউট হন মিরাজ।
ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে আজ সবচেয়ে সফল ছিলেন আকিল। ১০ ওভারে ১ মেডেন দিয়ে ৪১ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৭ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন অ্যালিক অ্যাথানেজ। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন গুদাকেশ মোতি ও রস্টন চেজ। আগের ম্যাচে পুরো ৫০ ওভার স্পিনারদের দিয়ে করিয়ে রেকর্ড গড়লেও এদিন ৭ ওভার পেসার জাস্টিন গ্রিভসকে দিয়ে করিয়েছে উইন্ডিজ। তিনি অবশ্য উইকেটশূন্য থেকে বেশ খরুচে ছিলেন। ৭ ওভারে দিয়েছেন ৬১ রান।