‘ক্যাডার’ শব্দটি নেতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হওয়ায় সিভিল সার্ভিস থেকে ‘ক্যাডার’ শব্দটি বাদ দিতে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘প্রশাসন নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ। বিশেষ করে বিসিএস—বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস, এটাকে নানা কারণে এখন মনে করা হয় ক্যাডার। এই ক্যাডার শব্দটির সাথে নেগেটিভি থাকে। এ জন্য জনপ্রশাসনের সংস্কার কমিশন অনেকগুলো সংস্কারের প্রস্তাব দেবে। এর মধ্যে একটা থাকবে যে এই ক্যাডার শব্দটি বাদ দিয়ে যার যে সার্ভিস যেমন সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিভিল সার্ভিস হেলথ, সিভিল সার্ভিস অ্যাগ্রিকালচার—এ রকম। এটা আমাদের বড় সংস্কার। এতে আমরা মনে করি, অনেকের মানসিক শান্তি আসবে। এটা করা দরকার।’
মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্যুর করতে গিয়ে দেখলাম, মানুষ মনের থেকে যে কথাগুলো বলেছে এবং কয়েকটি অফিস সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা রয়েছে। সে বিষয়ে আপনারাও জানেন। এগুলো আমি উল্লেখ করতে চাই না। তবু দু–একটা বলতে হয়, যেমন এসি ল্যান্ড, রেজিস্ট্রেশন অফিস সম্পর্কে মানুষের বাজে ধারণা। রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি এমন লেভেলে যে সেখানে কোনো অভিযোগ নেই। সবাই সেখানে দিয়ে যাচ্ছে। দিচ্ছে, নিচ্ছে এবং এটাও বলে আগের স্যারের থেকে কম নিচ্ছেন। দুর্নীতির এ ধরনের একটা প্রেক্ষাপট আমাদের জিইয়ে রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়, সেই পরিবর্তনের জন্যই এই পরিবর্তিত সরকার এসেছে। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি।’ ইতিমধ্যে এক লাখ মানুষ অনলাইনে কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক নাম পরিবর্তন হবে কি না, জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, অনেকে বলেছেন, জনপ্রশাসন না বলে জনসেবা বলা যায় কি না। জেলা প্রশাসক ব্রিটিশ আমলের সৃষ্টি এবং এই শব্দের বাইরে অনেকগুলো প্রতিশব্দ আছে। কালেক্টর আছে, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আছে, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট আছে। আমরা এসব নিয়ে সুপারিশ দেব। তবে সরকার সেটাই নেবে, যেটা দেশের জনগণ চায়।
শুধু শব্দ পরিবর্তন করে কোনো পরিবর্তন হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, আসলে মানুষের মন ও মস্তিষ্কের পরিবর্তন করতে হবে। এই দুই জায়গার পরিবর্তনটা আগে করতে হবে। সামনে আরও পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
যারা পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাদের কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এ বিষয়গুলো চিহ্নিত করে এসব লোকজনকে আমরা মেইন স্ট্রিম থেকে সরিয়ে দেব।’
এসএ