সাতক্ষীরার আশাশুনি জ্যেষ্ঠ সহকারি জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারি শফিউর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। আশাশুনি উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের বক্স উল্লাহ গাজীর ছেলে মোঃ ফারুক আল মামুন গত বৃহষ্পতিবার (১৮ মে) দুর্নীতি দমন কমিশনে এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্রে ফারুক আল মামুন উল্লেখ করেছেন যে,আশাশুনি সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে একই এলাকার সাহাবাজুল ইসলাম বাদি হয়ে তাকেসহ তার তিন ভাইকে বিবাদী করে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার জন্য দেঃ ৪৮/২০ নং মামলা দায়ের করেছেন। একই আদালতে একই তপশীল নিয়ে তিনিসহ দুই ভাই বাদি হয়ে সাহাবুজুল ইসলামসহ ছয় জনের নাম, উল্লেখ করে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার জন্য ৫১/২০ নং মামলা দায়ের করেন। মামলা দুটি একই আদালতে বিচারাধীন। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারি শফিউর রহমান ও সাহাবাজুল ইসলাম খুলনার বহেরা এলাকায় পুলিশ লাইনের বিপরীতে পাশাপাশি বসবাস করেন।
শফিউর রহমান ২০২১ সালে দোতলা বাড়িসহ ওই জমি কেনেন। বন্ধুত্বের সুবাদে সাহাবাজুলের পক্ষ নিয়ে তাদেরকে (ফারুক) নানাভাবে সমস্যার সম্মুখীন করছেন শফিউর রহমান। ১৪ পাতার আর্জি সংশোধনের জন্য কারণ দর্শানোর যথাযথ আবেদন না করায় চার বার আবেদন মঞ্জুর হয়নি। তবে গত বছরের ২২ আগষ্টের আদেশে একটি জায়গায় নিয়ম বহির্ভুতভাবে তীর চিহ্ন দিয়ে “আকার, আকৃতি ও প্রকৃতি পরিবর্তণ হইবে না বিধায়” প্রার্থনা মঞ্জুর করা হইল। পরবর্তী প্যারার শেষ পাতায় বাদিপক্ষকে ফ্রেস আর্জি দাখিলের নির্দেশ লেখা আছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচারক প্রশিক্ষণে থাকায় শফিউর রহমান বাদির দারা প্রভাবিত হয়ে ঘর ঘর দিন দিয়েছেন।
তবে গত ১৯ জানুয়ারি সংগৃহীত সত্যায়িত কপিতে কেবলমাত্র ২২.০৮.২২ তারিখের আদেশের তলায় বিচারক ও নকলখানার দুটি সিল ও সাক্ষর ছিল। তবে ১১ মে তারিখে সংগৃহীত সত্যায়িত কপিতে ২২ আগষ্টের আদেশের নীচে সংযোজিত করা হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর, ১২ অক্টোবর, ২৪ অক্টোবর ও চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি প্রতিটি দিনে এসডি’র জন্য দিন আছে মর্মে লেখা। একইভাবে একই পাতায় সিনিয়র সহকারি জজ আাশাশুনি, সাতক্ষীরা লেখা তিনবার ও পাশে তিনটি সিল, পাশে উপঃ জনাব প্রবীর কুমার দাস, সিনিয়র সহকারি জজ , আশাশুনি, সাতক্ষীরা (ভারপ্রাপ্ত) এর সিল ও ইনিশিয়াল সিগনেচার দেখানো হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি ১৯ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন(৩/২৩) দাখিল করেছেন তারা। পহেলা আগষ্ট মামলার দিন ধার্য আছে। এসব অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি গত ১১ মে দুর্ণীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেছেন।
সাহাবাজুল ইসলাম বলেন, তার আদি বাড়ি আশাশুনির গোকুলনগরে। পরে তিনি কয়রা উপজেলার ১নং এ বাড়ি করেছেন। খুলনায় বহেরায় ও তার বাড়ি আছে। তবে বেঞ্চ সহকারি শফিউর রহমানের সঙ্গে তার কোন বন্ধুত্ব নেই।
এ ব্যাপারে আশাশুনি সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারি শফিউর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। নিয়ম মেনেই তার বলা মতে জনৈক কার্তিক বৈরাগীকে দিয়ে সংশোধিত আর্জি লেখানো হয়েছে। আদেশ সংক্রান্ত সকল বিষয় আদালতের বিচার্যের মধ্যে পড়ে। তার খুলনা বগেরায় কোন বাড়ি নেই দাবি করে শফিউর বলেন, খুলনা জিরো পয়েন্টে তাদের একটি জমি আছে। তিনি পাইকগাছার রামনগরের বাসিন্দা ও পেশাগত কারণে সাতক্ষীরার কাটিয়া আমতলা এলাকায় ভাড়া থাকেন।
তবে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু সুফিয়ানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আল/দীপ্ত সংবাদ