ফেনীতে বিএনপি–পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ২০৮৮ আসামির কাউকে গ্রেপ্তার না করলেও আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন বিএনপি নেতা–কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে বিএনপির সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলায় ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে ২ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। বুধবার (১৯ জুলাই) ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হায়াত উল্ল্যাহ বাদী হয়ে পুলিশের কাজে বাঁধা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেন। দুটি মামলাতেই ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল খালেক, এয়াকুব নবী, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিনসহ ৮৮ জনের নাম–ঠিকানা উল্লেখ করা হয়।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও ছাত্রলীগ অতর্কিত হামলা ও গুলি চালিয়েছে। আবার এখন মামলাও হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। এসব করে এ সরকারের ক্ষমতা আর ধরে রাখা যাবে না। মামলা–হামলা করে আন্দোলন দমানো যাবে না। গ্রেপ্তার এড়াতে নেতা–কর্মীরা ঘর ছাড়লেও এলাকা ছাড়েননি।‘
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে শহরের ইসলামপুর রোডে লক্ষ্মীপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত ব্যক্তির স্মরণে সভা ও প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে মামলা করে সারাজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের আসামি করা হয়। যাতে গ্রেপ্তারের ভয়ে কেউ আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করেন। এত বেশিসংখ্যক অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে, যাতে কোনো সাধারণ সমর্থকও মাঠে থাকতে না পারে। এসব করে বিএনপিকে মাঠছাড়া করা যাবে না।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, পুলিশের কাজে বাঁধা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় যারা জড়িত ছিলেন তাদের আসামি করা হয়েছে। শহরের সব পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অজ্ঞাতনামা আসামি শনাক্ত করা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ফেনী জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার ও সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলালের নেতৃত্বে অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী শহরের ট্রাংক রোড়স্থ দাউদপুর ব্রিজ সংলগ্ন স্থান থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি শহরের জিরোপয়েন্টে এলে পুলিশ শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। পরে পদযাত্রাটি ওই সড়কের ইসলামপুর রোড়ের মাথায় পৌঁছলে পুলিশের আরেকটি দল মিছিলটি জেলা বিএনপির কার্যালয়ের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাক্কা–ধাক্কির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পুলিশ–বিএনপির ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার সময় ইটপাটকেল ও গুলির বিকট শব্দে পুরো শহর প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে থামিয়ে দেয়। ঘটনার পর, বিএনপি দাবি করছে সংঘর্ষে তাদের ২শ‘রও বেশি নেতা–কর্মী আহত হয়েছে।
আফ/দীপ্ত নিউজ