গত তিন বছরে (২০২৩–২০২৫) বাস্তবায়িত শিশু অধিকার সংক্রান্ত নয়টি প্রকল্প থেকে অর্জিত শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে এডুকো বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) গুলশান–২ এর লেকশোর গ্র্যান্ডে আয়োজিত “বাস্তবায়িত শিশু অধিকার প্রকল্পগুলোর লার্নিং–শেয়ারিং” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
এডুকো বাংলাদেশ ও তাদের বাস্তবায়নকারী অংশীদার পপি, ইএসডিও এবং নারী মৈত্রীর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শিশু ও যুবকেন্দ্রিক শিক্ষা, সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন কার্যক্রমে প্রকল্পগুলো বিভিন্ন জেলায় গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করেছে।
উপস্থাপিত ফলাফলে দেখা যায়, ৯০ শতাংশ শিশু বাংলা পড়া ও বোঝার দক্ষতায় উন্নতি করেছে এবং ৯৬ শতাংশ শিশু মৌলিক অঙ্ক দক্ষতায় অগ্রগতি দেখিয়েছে। একই সঙ্গে স্কুলের জন্য প্রস্তুতি ও নিয়মিত উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ৬৫ শতাংশ কিশোর–কিশোরী ও যুবক নিজেদের প্রকাশ ও কমিউনিটি কার্যক্রমে অংশগ্রহণে আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। পাশাপাশি ৮২ শতাংশ শিশু ও যুবক বাড়ি, স্কুল ও কমিউনিটিতে নিরাপদ বোধ করছে এবং ৬১ শতাংশ শিশু সুরক্ষামূলক আচরণ ও উদ্বেগ রিপোর্ট করার বিষয়ে বেশি সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ (এনডিসি)। তিনি বলেন, “আমাদের শিশু ও যুবকদের সক্ষমতা গড়ে তুলতে একটি সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণ করা প্রয়োজন, কারণ তারাই দেশের ভবিষ্যৎ। এই অনুষ্ঠান সেই চলমান প্রচেষ্টার প্রমাণ। প্রকল্পের সীমার বাইরে দীর্ঘমেয়াদি সুফল নিশ্চিত করতে সমষ্টিগত ও প্রভাবমুখী উদ্যোগ জরুরি।”
উপকারভোগী তানিয়া আক্তার বলেন, এডুকোর সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে শিশু বিবাহ প্রতিরোধ ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় রিপোর্ট ও আইনি প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে তাদের সক্ষমতা বেড়েছে। অপরদিকে, যুব উন্নয়ন প্রকল্পের উপকারভোগী মো. আরাফাত সানি জানান, এই প্রকল্প তার আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব ও ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বিশেষ অতিথি সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইদুর রহমান খান বলেন, “এডুকো শিশু সুরক্ষায় সমন্বিত পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।”
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদার, সিভিল সোসাইটি সদস্য, বিশেষজ্ঞ, মিডিয়া প্রতিনিধি ও প্রকল্পের উপকারভোগীরা অংশ নেন। এছাড়া শিশুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিভিন্ন জেলার সেরা যুব ও সিবিসিপিসি ক্লাবকে সম্মাননা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আনুমানিক ১৭০ জন অংশগ্রহণ করেন।
এডুকো বাংলাদেশ জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন থেকে প্রাপ্ত ব্যবহারিক সুপারিশ নীতিনির্ধারক, অনুশীলনকারী এবং শিশু ও যুব অধিকার নিয়ে কাজ করা অংশীজনদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।