শবে বরাত বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ রাত । ফারসি ভাষায় ‘শব’ অর্থ রাত, বরাত অর্থ ভাগ্য। তাই শবে বরাত অর্থ ভাগ্যরজনী। যেহেতু এ রাতে মানুষের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করা হয়, তাই একে ভাগ্যরজনী রাত ও বলা হয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম জাতিকে কিছু বরকতময় রাত দিয়েছেন, যাতে ইবাদত করলে আল্লাহর নিকট লাভ করা সম্ভব। এসবের মধ্যে শবে বরাত একটি।
হজরত ইকরামা (রা.) বলেন, এ রাতে আগামী এক বছরের রিজিক নির্ধারণ করা হয়। আগামী এক বছরে যারা মারা যাবে, যারা জন্মগ্রহণ করবে, তাদের তালিকা এ রাতে নির্দিষ্ট ফেরেশতাগণের হাতে সোপর্দ করা হয়। তাই এই রাতকে আরবি পরিভাষায় লাইলাতুল বরাত বলা হয়।
লাইলাতুন অর্থ রাত আর ‘বরাত’ অর্থ মুক্তি, ক্ষমা। যেহেতু এ রাতে আল্লাহ তাঁর অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন, তাই একে মুক্তির রাত বলা হয়। হাদিসে এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত নামে অভিহিত করা হয়েছে। তবে বিশেষ কিছু লোক এ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হয়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে আল্লাহ তাঁর সব বান্দাকে ক্ষমা করেন। তবে মুশরিক, হিংসুক, জাদুকর, ব্যভিচারী, মা–বাবার অবাধ্য সন্তান ও অন্যায়ভাবে হত্যাকারীকে ক্ষমা করেন না।’ (ইবন মাজাহ: ১৩৯০)।
শবে বরাতে বিশেষ কিছু আমল আছে, যা করলে বান্দা আল্লাহর নিকট লাভে ধন্য হয়। এ রাতের করণীয়গুলোর মধ্যে রয়েছে—
• রাতে নফল নামাজ পড়া
• রোজা রাখা
• কোরআন তিলাওয়াত করা
• কবর জিয়ারত করা
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাত আসবে, তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে এবং দিনে রোজা পালন করবে। কেননা এই দিন সূর্যাস্তের পরই আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, ‘কে আছো ক্ষমাপ্রার্থনাকারী, আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কে আছো রিজিকপ্রার্থী, আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো বিপদগ্রস্ত, আমি তাকে বিপদমুক্ত করব। ফজর হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এ কথা বলতে থাকেন।’ (ইবন মাজাহ: ১৩৮৮)
যূথী/দীপ্ত সংবাদ