বিজ্ঞাপন
বুধবার, নভেম্বর ২০, ২০২৪
বুধবার, নভেম্বর ২০, ২০২৪

শখের কুল বাগান থেকে বছরে আয় ১২ লাখ টাকা

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বাগেরহাটে শখের বসে ভারত সুন্দরী ও বল সুন্দরী জাতের কুল চাষ করে সফল হয়েছে সুজন গোলদার নামের এক কৃষি উদ্যোক্তা। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কচুয়া শাখায় কর্মরত সুজন ২০২১ সালে নিজ পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় ২০টি বল সুন্দরী জাতের কুলের চারা রোপন করেন। ভালো ফলন পাওয়ায় জমি ও গাছের পরিমান বাড়াতে থাকেন তিনি। বর্তমানে তার ৫বিঘা জমির ৩টি প্লটে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল গাছ রয়েছে ১ হাজার ৬শ টি। এখান থেকেই বছরে তিনি আয় করছেন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।

সরজমিনে বাগেরহাট কচুয়া উপজেলার বিষখালী গ্রামে সুজন গোলদারের শৌখিন এগ্যো বাগানে গিয়ে দেখা মিলবে গাছে গাছে ঝুলতে থাকা রসালো মিষ্টি ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুলের। কুলের ভারে নুইয়ে পরা প্রতিটি গাছে ধরে আছে ৩০ থেকে ৩৫ কেজি করে কুল। তিনটি প্লটে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের এই কুল চাষ করছেন সুজন গোলদার। বর্তমানে তার বাগানে কুল গাছ রয়েছে প্রায় ১৬শ টি। আর বাগানের পরিচর্যায় কাজ করছেন ৮ জন।

কৃষি উদ্যোক্তা সুজন গোলদার বলেন, ২০২১ সালে শখের বসে খুলনার পাইকগাছা থেকে বল সুন্দরী জাতের ২০টি চারা সংগ্রহ করি। এরপর পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় চারা গুলো রোপন করি। ভালো ফলন পাওয়ায় কচুয়া কৃষি অফিস থেকে কুল চাষের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি এবং দুটি প্লটে প্রায় ৪বিঘা জমিতে বল সুন্দরী ও ভারত সুন্দরী জাতের ১২শ চারা রোপন করি। ২০২২ সালে ভালো ফলন ও লাভ হওয়ায় জমি ও গাছের পরিমাণ আরও বাড়াতে থাকি। বর্তমানে আমার ৫বিঘা জমির ৩টি প্লটে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল গাছ রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬শ টি। প্রতিদিন এই বাগান থেকে আমি ১০ থেকে ১২ মণ কুল সংগ্রহ করছি। যার প্রতি মণ কুল বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকায়। আমার এখানে ৮ জন কর্মরত রয়েছে। যারা গাছের পরিচর্যা থেকে শুরু করে ফল সংগ্রহ ও স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তি পিরোজপুর জেলা থেকেও অনেক পাইকারি কুল ব্যবসায়ী আমার বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে থাকেন।

বাগানে কর্মরত বিষখালি গ্রামের তপন মিস্ত্রি বলেন, আমি গত এক বছর যাবত এই বাগানে কাজ করছি। আমাদের এখানে বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের তিনটি কুল রয়েছে। আমরা মূলত কোন রাসায়নিক সার ছাড়াই শুধুমাত্র জৈব সার যেমন, সরিষা খৈল, ভার্মি কম্পোস্টসহ বিভিন্ন জৈব সার ব্যবহার করে গাছ তৈরী করেছি। এ কারণে আমাদের গাছে ভালো ফলনের পাশাপাশি ফলের সাইজও অনেক বড় হয়। এই ফলগুলো আমরা স্থানীয় বাধাল বাজারে বিক্রি করি। এছাড়া অনেক পাইকার ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করেন।

কচুয়া উপজেলার আন্দামানিক গ্রামের বাসিন্দা সুবীর মন্ডল বলেন, আমি মূলত সুজন বাবুর বাগানের দেখতে এসেছি। বাগানে ফল দেখে আসলেই আমি মুগ্ধ হয়েছি। প্রতিটা গাছে এত পরিমান ফল হয়েছে যে, ফলের ভারে গাছগুলো নুয়ে পড়েছে। আমারও ইচ্ছা আছে এমন একটি বাগান করার। তাই সুজন বাবুর কাছ থেকে এ বিষয়ে পরামর্শ নিয়েছি।

কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মামুনূর রশিদ বলেন, সুজন গোলদার ২০২২২৩ অর্থ বছরে আমাদের এখান থেকে কুল চাষের উপরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এরপরে এস,,সি,পি প্রকল্পের আওতায় তাকে আমরা সার, কীটনাশক ও চারা দিয়ে সহায়তা করেছি। এছাড়া কচুয়াতে দিন দিন উচ্চ ফলনশীল জাতের বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী ও কাশ্মীরি জাতের কুল চাষের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তা ও কৃষকদের কুল চাষের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা প্রদান করছি।

 

মামুন / আল / দীপ্ত সংবাদ

 

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More