কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয়দের সহায়তায় জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ২.৭ মিলিয়ন ডলার করে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান সরকার।
এ অনুদান পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ), দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, আশ্রয় ব্যবস্থার উন্নয়ন, সাইট ব্যবস্থাপনা, সাইট উন্নয়ন ও সুরক্ষা বিষয়ক একটি বিস্তৃত প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হবে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি ইউনিসেফ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমা ব্রিগহাম এবং আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুসাত্তার এসোয়েভের সঙ্গে পৃথকভাবে এই অনুদানের এক্সচেঞ্জ অব নোটসে (দ্বিপক্ষীয় বেসরকারি চুক্তি) সই করেছেন।
সোমবার বাংলাদেশের জাপান দূতাবাসের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ইউনিসেফের “মাল্টিপাল হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিসটেন্স ফর ডিসপ্লেসড পার্সনস ফ্রম মিয়ানমার ইন কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড ভাসানচর”– শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ওই এলাকার ১ লাখ ৭৬ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সহায়তা দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, আইওএমের এই প্রকল্পের লক্ষ্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের জীবনমান উন্নত করা।
রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা আশা প্রকাশ করেন, “জাপান সরকারের এই সহায়তা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করবে।”
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এই বৃহৎ পরিকল্পনার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। এই পাঁচটি খাত রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ের সুরক্ষা, জীবনযাত্রার মান এবং ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জনের মৌলিক বিষয়। প্রকল্পটি ক্যাম্পের অনেক মানুষ ও স্থানীয় সম্প্রদায়কে উপকৃত করবে।”
তিনি বলেন, “জাপান মিয়ানমারে শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে সহায়তাসহ স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এবং আইওএমের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সহযোগিতা করবে।”
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “অন্য সব জায়গার শিশুদের মতো রোহিঙ্গা শিশুদেরও সমান অধিকার নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবার অভাবে শিশুরা অসুস্থতার ঝুঁকিতে পড়ে, তাদের জীবনকে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেওয়া হয় এবং তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে হুমকির মুখে ফেলে।”
আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন আবদুসাত্তার এসোয়েভ বলেন, “রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাপান আইওএমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক তহবিল হ্রাস একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। আমরা আন্তরিকভাবে প্রশংসা করি যে জাপানের জনগণ ও সরকার ২০১৭ সাল থেকে এ উদ্যোগে আইওএম–এর কার্যক্রমে সমর্থন দিয়ে আসছে। আমরা আশা করি, আইওএম ও জাপান সরকারের মধ্যে দৃঢ় অংশীদারিত্ব আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে।”
২০১৭ সালের আগস্টে জরুরি অবস্থার শুরু থেকেই, জাপান বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তার বিষয়ে সমর্থন জানিয়ে আসছে। এবারের এই অর্থায়নের মাধ্যমে আইওএম ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশে কর্মরত এনজিওগুলোতে ২২০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।
বাসস/এজে/দীপ্ত সংবাদ