কোনো ব্যক্তি যখন প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প পরিমাণে পানি পান করেন তখন দেহের সমগ্র কার্যক্রিয়া সম্পাদনে পানির ঘাটতি দেখা দিলে, এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। রোজায় এই সমস্যায় আক্রান্ত হবার আশংকা সবথেকে বেশি। অতিরিক্ত গরমে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার কারণে ঘাম, প্রস্রাব, ও শ্বাস–প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রচুর পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, ফলে দেহ পানিশূন্য হয়ে পড়ে।
রোজায় পানিশূন্যতা রোধে করণীয়
১। ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
২। ইফতারে বেশি বেশি ফল ও ফলের রস খেতে হবে। বেছে নিতে পারেন তরমুজ, বাঙ্গি, মাল্টা, বেল, পেঁপে ইত্যাদি।
৩। টকদই ও লাচ্ছি যোগ করতে পারেন ইফতারে।
৪। ইফতারে রাখতে পারেন ডাবের পানি ও খাবার স্যালাইন। তবে উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে পটাশিয়াম বেশি থাকলে তা এড়িয়ে চলাই উত্তম।
৫। রাতের খাবার ও সেহরিতে বেছে নিতে হবে সহজেই হজম হয় এমন খাবার। অতিরিক্ত তেল ও মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে, কেননা তা পরিপাকে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়।
৬। সেহরিতে ২/১ দিন পর পর রাখতে পারেন ডাল দিয়ে লাউ বা চালকুমড়া দিয়ে ঝোল তরকারি।
৭। সেহরি ও রাতের খাবারে নিয়মিত পানি সমৃদ্ধ সবজি যেমন চালকুমড়া, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, স্কোয়াশ, শসা, টমেটো রাখুন।
৮। সেহরি বা রাতের খাবারে এক বেলা দুধ রাখুন।
৯। খরচ কমাতে ডিম ও ডাল রাখতে পারেন।
১০। কাজ ছাড়া বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন, বের হলেও রোদ চশমা ও ছাতা ব্যবহার করুন।
১১। অনেকেই ইফতারের পর ফ্রিজে রাখা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করেন, এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
১২। নিয়মিত গোসল করতে হবে, খুব খারাপ লাগলে চোখেমুখে পানির ঝাপ্টা দিতে পারেন।
১৩। যাদের দুধ চা ও কফি পানের অভ্যাস আছে তা বাদ দিতে হবে। কারণ দুধ চা ও কফি আমাদের দেহে পানিশূন্যতার সৃষ্টি করতে ভূমিকা পালন করে।
১৪। খেজুর, ফল, জুসের সাথে ইফতারে রাখতে পারেন পান্তাভাত, যা সারাদিনের রোজার শেষে আপনার দেহে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
১৫। ডায়রিয়া বা জ্বর বা অতিরিক্ত বমি হলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
যূথী/ দীপ্ত সংবাদ