নওগাঁর রাণীনগরের গোনা ইউনিয়ন পরিষদের এলাকায় রেললাইনের রেলের পিলারে রাস্তার মুখ বন্ধ থাকায় ঘুরে যেতে হচ্ছে ২৫কিমি বেশি রাস্তা।
রেল লাইনের পূর্বদিকে অবস্থিত চকবলারাম পূর্ব, সাতানীপাড়া, খাজুরিয়াপাড়া, বিজয়কান্দি, বড়বড়িয়া, গোবিন্দপুর ও ঝিনা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে রেললাইন পার হয়ে প্রতিনিয়তই সেবা নিতে যেতে হয় ইউনিয়ন পরিষদে।
রেললাইনের সঙ্গে সড়কের সংযোগস্থলে কোন অনুমোদিত রেলগেইট না থাকায় রেললাইন পারাপারের সময় দুর্ঘটনা রোধে বেশকিছু দিন আগে রেলের পক্ষ থেকে সড়কটির মুখে পিলার দিয়ে যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবা নিতে এই গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের বাধ্য হয়ে রাণীনগর সদর হয়ে ঘুরে ২৫কিলোমিটার পথ বেশি পাড়ি দিয়ে পরিষদে যেতে হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি যাতায়াতে বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষকে।
ঝিনা গ্রামের হানিফ মন্ডল বলেন একটি রেলগেইটের অভাবে প্রতিদিন হাজারো মানুষকে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। কৃষি প্রণোদনার উপকরণসহ বিভিন্ন সেবা নিতে অতিরিক্ত ২৫কিমি রাস্তা পাড়ি দিয়ে যেতে হয় ইউপি কার্যালয়ে যা খেটে খাওয়া গরীব ও অসহায় মানুষদের পক্ষে খুবই কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। বছরের পর বছর এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এই অঞ্চলের অসহায় মানুষদের। এমন দুর্ভোগ থেকে এই অঞ্চলের মানুষদের মুক্তি দিতে মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বড়বড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক হাসিবুল ইসলাম রাজু বলেন আমি নিজের অর্থে ইট কিনে রেললাইনের উপরে দিয়েছিলাম যাতে পথচারীরা ছোটখাটো যানবাহন নিয়ে সহজেই চলাচল করতে পারে। পরে রেলের লোকজন এসে সেই ইটগুলো ফেলে দিয়ে সড়কের মুখে পিলার দিয়ে সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে পায়ে হেটে শুধুমাত্র রেললাইন পাড় হওয়া যায়। আমরা দ্রুত এই শাস্তি থেকে মুক্ত হতে চাই। এ ছাড়া আপাতত চলাচলের জন্য যদি রেল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয় তাহলে আমরা গ্রামবাসীরা নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়ে একটি রেলগেইট তৈরি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাজি আছি। আমি এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সান্তাহার জোনের সিনিয়র সাব এ্যাসিষ্টান্ট ইঞ্জিনিয়ার (ওয়ে) মো. আফজাল হোসেন বলেন ওই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ওই স্থানে একটি রেলগেইট নির্মাণ করা খুবই জরুরী। আগে সড়কটি উন্মুক্তই ছিলো। কিন্তু বেশকিছু দিন আগে রেলের ওই স্থানে ট্রেনের সঙ্গে একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটার কারণে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সড়কের মুখটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে রাণীনগরের ওই স্থানসহ রেলের সান্তাহার থেকে মালঞ্চি অংশ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রেলগেইট নির্মাণের জন্য একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় সেই তালিকা অনুমোদন সাপেক্ষে অর্থের বরাদ্দ দিলে আমরা ওই সকল স্থানে রেলগেইট নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করব।
আব্দুর রউফ রিপন/শায়লা/দীপ্ত নিউজ