বিজ্ঞাপন
শনিবার, মার্চ ১, ২০২৫
শনিবার, মার্চ ১, ২০২৫

রবিবার ২৫ ক্যাডারের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

ফেসবুকে লেখালেখির কারণে ২৫ ক্যাডারের ১২ জন কর্মকর্তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রবিবার সারাদেশে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

শনিবার (১মার্চ) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি তথ্য সার্ভিসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান।

তিনি জানান, কর্মবিরতি চলাকালে জরুরি সেবা ব্যতীত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ করে ব্যানারসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।

এর আগে, ২৫ ফেব্রুয়ারি এক অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হলেও জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে সেটি স্থগিত করা হয়। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দেওয়া হয় যে, ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে ৩ মার্চ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকেই পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটাপদ্ধতি বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেও সিভিল সার্ভিসে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে জনদাবি উপেক্ষা করে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ক্ষমতাধর একটি গোষ্ঠীর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে ক্যাডারবহির্ভূত করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসে কৌশলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা আনা হয়েছে, যাতে পর্যায়ক্রমে এসব খাতকে মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়। পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের বিষয়ে কোনো সংস্কার প্রস্তাব না রাখা এবং পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসের বাইরে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে এসব সেক্টরে মেধাবীরা আগ্রহ হারাবেন এবং ধীরে ধীরে খাতগুলো মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।

সভায় আরও বলা হয়, গণিতের মতো বিষয়কে বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে মুখস্থবিদ্যার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা প্রকৃত মেধার মূল্যায়নের অন্তরায়। এছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, জেলা পরিষদ বিলুপ্তির মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার বাস্তবতা বিবর্জিত প্রস্তাবের মতো বিষয়গুলো জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পরিষদের পক্ষ থেকে পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, উপসচিব পদে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারসহ সব ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসে অব্যাহত রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রবেশের পর শুধু প্রশাসন ক্যাডারের জন্য পূর্বের সার্ভিসে ফেরার সুবিধার প্রস্তাব বাতিল, জেলা প্রশাসককে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব বাতিল, ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’এর পরিবর্তে ‘ভূমি সার্ভিস’ বা ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা সার্ভিস’ নামকরণ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ বা ‘সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ করার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে লেখালেখির কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা একই ধরনের কাজ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ঘটনাকে প্রশাসন ক্যাডারের একতরফা আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো. আরিফ হোসেন। এতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দাবি পূরণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More