মেয়ে ফাহমিদা আক্তার মনিকে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে রেখে মৃত স্বামী আবুল কাশেমের (৫০) মরদেহ নিয়ে ছোট দুই শিশু পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন গোসাইপুর গ্রামে রওয়ানা হন স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুনা। আবুল কাশেম ফেনীর ফুলগাজীর গোসাইপুর গ্রামের মৃত মৌলভী হাফেজ উল্লাহর ছেলে।
পরিবার সূত্র জানায়, রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে আবুল কাশেমের মরদেহ গ্রামে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
আবুল খায়ের গ্রুপের টোব্যাকোতে চাকরি করতেন আবুল কাশেম। চাকরির সুবাদে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজার সদর এলাকায় বসবাস থাকতেন তিনি। রবিবার ভোরে কাশেম বুকে ব্যথা অনুভব করেন। স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে একমাত্র মেয়ে ফাহমিদা আক্তার কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। সকালে বাবার মরদেহ ঘরে রেখেই মেয়ে ফাহমিদাকে পরীক্ষা দিতে পাঠিয়ে দেন মা। এরপর স্বামীর মরদেহ নিয়ে কক্সবাজার থেকে ফেনীর ফুলগাজীর রওয়ানা হন রুনা।
মেয়ের পরীক্ষা কেমন হয়েছে; সে খবর নিতে পারেনি মা। বাড়িতে পৌঁছে মেয়ে ও স্বামীর কথা বলে বার বার মুর্চা যাচ্ছেন তিনি। এসময় বাড়ির লোকজন তাকে শান্ত্বনা দেয়।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, সকালটা ছিল তাদের জন্য দুঃসংবাদ। মেয়েটাকে পরীক্ষার কেন্দ্রে রেখে স্বামীর লাশ নিয়ে কক্সবাজার থেকে গ্রামে আসা যেন ভাবতে শরীর শিউরে ওঠে। তিনি বলেন, রবিবার বাদ আসর বাড়ির পাশেই জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে কাশেমের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।