সবশেষ ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ ও ভারত মুখোমুখি হয়েছিল ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে। পুনেতে সেই ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছিল ‘ম্যান ইন ব্লু’রা। এর আগে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ভারত দাপট দেখিয়ে ২৮ রানে হারিয়েছিল লাল–সবুজ দলকে।
অবশ্য, টাইগার ভক্তদের হৃদয়ে এখনো উঁকি দেয় ২০০৭ বিশ্বকাপের স্মৃতি, যখন ১৭ মার্চের সেই ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। দুই বিশ্বকাপের মাঝে একমাত্র দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে (২০১৫) ভারতকে ঘরের মাঠে ২–১ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল বাংলাদেশ। এমনকি ২০২৩ এশিয়া কাপে কলম্বোতে ভারতকে ৬ রানে হারানোর সুখস্মৃতিও রয়েছে টাইগারদের।
তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এখন পর্যন্ত দুই দল একবারই মুখোমুখি হয়েছে। ২০১৭ সালে বার্মিংহামের সেই সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ২৮ রানে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। এবার কি আইসিসি ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে হারের বৃত্ত ভাঙতে পারবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল?
প্রতিবারের মতো এবারও ভারত–বাংলাদেশ ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স খুব একটা ভরসা যোগাচ্ছে না টাইগারদের। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত একাদশ নিয়ে কিছু না বললেও জানিয়েছেন, কন্ডিশন ও পরিস্থিতি বুঝেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের বিপক্ষে বেঞ্চে থাকতে হতে পারে তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়কে। তার পরিবর্তে একাদশে জায়গা পেতে পারেন জাকের আলি অনিক। এতে করে চার নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যেতে পারে মেহেদি হাসান মিরাজকে, যিনি সম্প্রতি এই পজিশনে খেলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। পেস আক্রমণে তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা ও মুস্তাফিজুর রহমানের একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি। স্পিন বিভাগে রিশাদ হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজ ট্রাম্প কার্ড হতে পারেন।
দুবাইয়ের উইকেট স্পিনারদের জন্য সহায়ক হতে পারে, তাই ভারত তিনজন স্পিনিং অলরাউন্ডার নিয়ে মাঠে নামতে পারে। একইসঙ্গে, তাদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, “যখন বিপক্ষ দল তিনজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার নিয়ে মাঠে নামে, তখন তো কোনো কথা হয় না। আমাদের দলে দুই স্পিনার এবং তিন অলরাউন্ডার রয়েছে।“
সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা এবং মুস্তাফিজুর রহমান।
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, ওয়াশিংটন সুন্দর, অক্ষর প্যাটেল, কুলদ্বীপ যাদব ও মোহাম্মদ শামি।
বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে তারা খুব বেশি ওয়ানডে খেলেনি। গেলো বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। সেই সঙ্গে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান শাহিনসের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বিশাল পরাজয় হতাশার কারণ হয়ে থাকতে পারে।
দুবাইয়ে দুই দলের আগের দেখায় একবারও ভারতের বিপক্ষে জয় পায়নি বাংলাদেশ। ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে ম্যাচের শেষ বলে ভারতের কাছে পরাজিত হয়েছিল টাইগাররা। এখন দেখার বিষয়, ১৮ বছর ধরে আইসিসি ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারে কি না বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ফরম্যাটে দুই দলের এখন পর্যন্ত ৪১টি সাক্ষাতে ভারত জিতেছে ৩২ বার, আর বাংলাদেশ ৮ বার। এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে (চট্টগ্রাম, ২০০৭)।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত–বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি।