দীর্ঘ চার বছর চেষ্টার পর নিজের তৈরি ‘উড়োজাহাজে’ আকাশে উড়লেন মানিকগঞ্জ, শিবালয় উপজেলার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস মোল্লা (২৮)।
সোমবার (৩ মার্চ) বিমানটি প্রথম উড়লেও, জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার মোল্লার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে যমুনার চরে জুলহাস তার তৈরি বিমান আকাশে উড্ডয়ন করেন। এ সময় তিন দফায় প্রায় তিন মিনিটের মতো সময় আকাশে উড়েছেন তিনি।
জুলহাস মোল্লার বাড়ি জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায় হলেও নদী ভাঙনের কারণে বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটগর তেওতায় পরিবারসহ বসবাস করেন।
ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর এলাকায় বি কে এস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর, আর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে। ২৮ বছর বয়সী যুবক জুলহাস চুক্তিভিত্তিকভাবে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন।
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা বলেন, ছোটবেলা থেকেই জুলহাস প্লাস্টিকের জিনিসপত্র কাটাকাটি করে কিছু বানানোর চেষ্টা করতো। ওর চেষ্টা আজকে সফল হয়েছে। গত চার বছর ধরে চেষ্টা করার পর আজ ওর বানানো বিমান আকাশে উড়েছে। প্রতি বছরই যমুনার চরে উড্ডয়নের চেষ্টা করে। এবার সফল হয়েছে।
উদ্ভাবক জুলহাস বলেন, রিমোট কন্ট্রোল বিমান বানিয়ে আকাশে ওড়ানোর পর থেকে ইচ্ছা জাগে নিজে বিমান তৈরি করে আকাশে উড়বো। এই চিন্তা থেকেই বিমান তৈরি জন্য গবেষণা শুরু করি। তিন বছর গবেষণা আর এক বছর বিমান তৈরি করতে লেগেছে। দীর্ঘ চার বছরের পরিশ্রমের পর আজকে আমি সফল হয়েছি। নিজের তৈরি করা বিমানে নিজেই পাইলট হয়ে আকাশে উড়েছি।
তিনি আরও বলেন, বিমানটি তৈরি করতে আমার প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিমান তৈরির জন্য মালামাল ক্রয় করেছি। বিমানের সেভেন হরস পাওয়ারের একটি মোটর পাম্প ও নিজের তৈরি করা পাখা ব্যবহার করা হয়েছে।
বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করা হয়নি উল্লেখ করে জুলহাস বলেন, এই উড়োজাহাজ মূলত পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করা যেতে পারে। ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে উড়োজাহাজটি।
জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, জুলহাসের গবেষণাকাজে সরকার সহযোগিতা করবে। তবে এটি কারিগরি বিষয়। প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে তাঁকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
এসএ