ভারতের গণমাধ্যম এখন গোদিমিডিয়া নামে পরিচিত বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রবিবার (৪ মে) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
কামাল আহমেদ বলেন, “বিগত সরকারের আমলে টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স রাজনীতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছিল, সাংবাদিকতার দক্ষতায় নয়। ‘এক মালিক এক মিডিয়া’ প্রস্তাবে যারা বিরোধিতা করেছেন তারা ভারতের উদাহরণ টেনেছেন। কিন্তু বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে ভারতের অবস্থান শোচনীয়, যা বাংলাদেশের থেকেও পেছনে। ভারতের গণমাধ্যম এখন গোদিমিডিয়া নামে পরিচিত।”
সংবাদমাধ্যমকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পক্ষে মত দিয়ে কামাল আহমেদ বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের প্রস্তাব অনেকেই বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম যেহেতু লাভজনক না তাই এটা সম্ভব না। তবে আমরা জয়েন্ট স্টক কোম্পানির দপ্তর থেকে তথ্য পেয়েছি—প্রায় দেড় ডজনেরও বেশি সংবাদ মাধ্যম লাভজনক। তাই কমিশন বলছে, এটা বাস্তবায়ন সম্ভব।’
সংবাদকর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ও বেতন কাঠামো নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা বলছেন, নবম গ্রেডে বেতন দেয়া সম্ভব না, তারা মূলত সংবাদকর্মীদের ন্যায্য বেতন না দিয়েই সরকারি বিজ্ঞাপনের সুবিধা নিতে বেশি উৎসুক। ২০১৪ সালে ঘোষিত ৮ম ওয়েজ বোর্ড যদি যথাযথ বাস্তবায়িত হতো, একজন প্রতিবেদন বা সহ–সম্পাদকের বেতন এতদিনে নবম গ্রেড সরকারি কর্মচারীর স্তরে পৌঁছে যেত।’
গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের বিষয়ে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে কামাল আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যমে সাংবাদিকদের হুমকি–ধামকি দেয়া হচ্ছে, মব ক্রিয়েট করা হচ্ছে। সরকারকে এসব বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থায়ী একটা গণমাধ্যম কমিশনের সুপারিশ করেছি। সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করতে বলেছি। এই দুটির জন্য আমরা খসড়াও তৈরি করে দিয়েছি। প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর এখন পর্যন্ত সরকারের দিক থেকে খুব বেশি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এমনটি আমরা শুনিনি। তবে তারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’