নোয়াখালীর সদর উপজেলার অশদিয়া ইউনিয়ন থেকে নূর নাহার (১৬) নামের এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের প্রলোভনে সুরাদ (২৩) নামের এক যুবক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে নিহতের মৃতদেহটি উদ্ধার করে ওই হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। নিহত নূর নাহার অশ^দিয়া ইউনিয়নের আইয়ুবপুর গ্রামের সাহেব আলী বাড়ির সাহেব আলীর মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রীর মৃত্যুর পর পুনঃরায় বিয়ে করে বড় ছেলেদের নিয়ে কাজের সুবাদে চট্টগ্রামে থাকতো সাহেব আলী। ফলে বাড়িতে বড় বোন নার্গিস আক্তার ও তার খালার সাথে গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকতো নূর নাহার। এরই মধ্যে দত্তেরহাটের একটি বেকারিতে চাকরি নেয় নূর নাহার। চাকরিতে আসা যাওয়ার সুবাদে নোয়াখালী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ছাগলমারা পোল এলাকার আবদুল খালেক ভান্ডারির ছেলে সুরাদের সাথে পরিচয় ও পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে নাহারের।
নিহতের বাবা সাহেব আলী অভিযোগ করে বলেন, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নূর নাহারকে একাধিকবার ধর্ষণ করে সুরাদ। এতে ৬মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে নূর নাহার। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে সুরাদকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বিভিন্ন সময় নাহারকে মারধর করতো।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নূর নাহার সুরাদের একটি ছবি মোবাইলে দেখিয়ে ছাগলামারা পোল এলাকার দোকানদারদের কাছে জানতে চায় তাকে চিনে কিনা। পরে ব্যবসায়ীরা বিষয়টি সুরাদের বাবা ও বড় ভাই কাউসারকে জানালে তারা আসে স্থানীয় মাসুদ নামের এক ফার্মেসী দোকানে নিয়ে নূর নাহারের সাথে কথা বলে। এক পর্যায়ে কৌশলে কাউসার নূর নাহারের মোবাইলটি তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মোবাইলের ভিতরে থাকা সিম ও মেমোরিকার্ড নষ্ট করে ফেলেন। পরদিন শুক্রবার রাতে নূর নাহার পুনঃরায় ছাগলমারা পোল এলাকায় আসলে সুরাদ তার কয়েকজন বন্ধু’সহ নাহারকে দত্তেরহাট হাউজিং ব্লিডিং এর দিকে নিয়ে যায়। কিছু সময় পর ওইস্থান থেকে কান্না করতে করতে বের হয়ে যায় নাহার। পরে রাতের কোনো একসময় নিজের বাড়ির পাশের সড়কে গিয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। বিষয়টি টের পেয়ে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নূর নাহারকে মৃত ঘোষনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাগলমারা পোল এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বৃহস্পতিবার তার সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনার বর্ননা দিয়েছিলেন নূর নাহার। সে জানিয়ে ছিলো সুরাদ তাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে। সে বর্তমানে ৬মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সবশেষ গত বুধবার মাইজদী হাউজিং এলাকার সুরাদের এক বোনের বাসায় নিয়েও নূর নাহারকে ধর্ষণ করে সুরাদ। কিন্তু তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে নাহারকে মারধর করতো।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুরাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সুধারাম মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান জানান, বিষয়টি আমাদের আগে কেউ অবগত করেনি। দুপুরে সংবাদিকদের মাধ্যমে জানার পর হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাহবুবুর/ আল/ দীপ্ত সংবাদ