সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিএনপি বরাবরই বিশ্বাস করেছে, এখনো করে এবং ভবিষ্যতেও করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (৪ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকুক আর না থাকুক, বিএনপি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করবে। কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেয়াকে সমর্থন করব না। আমরা নির্দ্বিধায়, দৃঢ় চিত্তে, স্পষ্ট করে বলতে পারি, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব। ক্ষমতায় থাকি আর না থাকি, যেখানেই থাকি, এই ব্যাপারে আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি।’
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনাদের প্রতি অতীতে যে নির্যাতন–নিপীড়ন হয়েছে, আপনাদের আইন–কানুন যে পুরোপুরি ফ্যাসিবাদী চরিত্র দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারগুলোতে আমরা লড়াই করেছি। আমরা লড়াই করে চলেছি। এখনো করছি।’
সংস্কার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বিপক্ষে প্রচার চালানো হয় যে আমরা সংস্কারের বিপক্ষে। প্রায়ই বলা হয়, সংস্কার নয় আমরা নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কারের বিষয়টি শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা এনেছি। আমরাই সংসদীয় ব্যবস্থায় গেছি রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা থেকে। অনেক আপত্তি সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আমরা সংবিধানে নিয়ে এসেছি।’
গণমাধ্যমের সামনে কথা বলার ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতির উদ্বেগ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা আতঙ্কিত থাকি সাম্প্রতিক কালে প্রেসের সামনে কথা বলতে গিয়ে। মনে হচ্ছে, কোন প্রেস আমার কথাগুলো কীভাবে নেবে। তারপর তারা কীভাবে ছাপবে। অথবা সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে এটা উপস্থাপন করবে। চরিত্র হরণ করার যে প্রবণতা বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা দিয়েছে, এটাতে চিন্তিত না হয়ে উপায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিই প্রথম সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে উন্মুক্ত করেছিল। তার আগে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল ছিল, সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমরা বলি না যে আমরা একেবারেই ধোয়া তুলসী পাতা। কিন্তু এ কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য অনেক বেশি কাজ করেছি। আজকের যে আকাশমাধ্যম, এটা আমাদের দ্বারাই শুরু হয়েছিল। আমাদের সময়েই সংবাদপত্রের এবং সংবাদকর্মীদের ওপর নিপীড়ন তুলনামূলক কম হয়েছে।’
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী এবং ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন প্রমুখ।