সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪
সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে ছেলে

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বাড়ির উঠোনে বাবার মরদেহ! এলাকাবাসী আর স্বজনদের কান্নার মাতম। সকালে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন বাবা। একই দিনে দুপুরে ফাইনাল পরীক্ষা ছেলের। তাই বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মোঃ সায়েম মিয়া (১১)

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের জাবরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবজাল মিয়া মারা যান সকাল ১০ টার দিকে।  তার ছেলে মো: সায়েম ২৫নং বানিয়াজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় তার বার্ষিক পরীক্ষা ছিল। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিতে সাড়ে বারোটার দিকে স্কুলে আসে ছেলে সায়েম।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন ওই বিদ্যালয়ে দেখা যায়, সায়েম পরীক্ষার খাতায় লিখছে। এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছে আমার আব্বা আর নেই! বাবা বলতো ভাল করে পড়ালেখা করে অনেক বড় হবে। তাই আমি পরীক্ষা দিতে এসেছি। এ সময় তার সহপাঠি বন্ধুদের চোখেও পানি চলে আসে। তার কান্না হৃদয় ছুঁয়ে গেছে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত শিক্ষকদেরও।

সায়েমের চাচা শাকিব হাসান বলেন, আবজাল মিয়া (৫০) লিভারের টিউমার জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। সে মুন্নু ফ্রেবিক্স লিঃ ইলেকট্রিসিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসা করতে গিয়ে তার পরিবার একেবারে নি:স্ব। একটি মাত্র ছেলে সায়েম।

এদিকে শিক্ষক ও সহপাঠিরা সায়েমকে আজ পরীক্ষা না দিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু শিশুতোয় মনের খেয়াল ! নাছোড়বান্দা সায়েম পরীক্ষা দিবেই।

পরে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা শেষ করার পর শিক্ষকরা সাথে করে  সায়েমকে নিয়ে তাদের বাড়িতে ফেরেন। বাড়িতে শোক আর কান্নার মাতম। বাবার লাশের কাছে বসে কান্নায় ভেঙে পড়ে সায়েমও। বিকেলে সায়েমের পিতার মরদেহ কবরস্থ করা হয়।

শ্রেণী শিক্ষক  সামছুন নাহার বলেন, পরীক্ষার্থী সায়েমের বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা মর্মাহত।  তাকে মানবিক বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষা না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মেধাবী সায়েম পরীক্ষা দিবেই। তাই তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে আজকের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সান্তনা ও সাহস জুগিয়েছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বাবুল মিয়া বলেন, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ছেলে পরীক্ষা দিতে এসেছে। বিষয়টি জানার পর আমরা ওই ছাত্রকে বুঝানোর পরও সে বলে স্যার আমি সিক্সে উঠবো। তাই ফাইনাল পরীক্ষা দেবোই। পরীক্ষা শেষে ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে শোকার্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছি। আমরা সায়েমের  উজ্জল ভবিষৎ কামনা করি।

 

জাহিদুল হক/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More