সোমবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৫
সোমবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৫

বাংলাদেশ-জাপান ইপিএ আলোচনা সম্পন্ন

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সংক্রান্ত আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোতেগি তোশিমিৎসুর সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বাংলাদেশজাপান ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (বিজেইপিএ) এর নেগোসিয়েশন শেষ হওয়ার যৌথ ঘোষণা দেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশজাপান ইপিএর চিফ নেগোশিয়েটর আয়েশা আক্তার, ডেপুটি চিফ নেগোশিয়েটর মো. ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ এবং ফোকাল পয়েন্ট মাহবুবা খাতুন মিনু উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশজাপান ইপিএ নেগোসিয়েশনের প্রাথমিক ধাপে গঠিত যৌথ গবেষণা দল ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর উভয় দেশে একযোগে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে ১৭টি সেক্টর অন্তর্ভুক্ত করে সমন্বিত পদ্ধতিতে আলোচনা পরিচালনার সুপারিশ করা হয়। এরপর ২০২৪ সালের ১২ মার্চ উভয় দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে নেগোসিয়েশন শুরুর ঘোষণা দেয়।

সম্মত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১৯ থেকে ২৩ মে ঢাকায় প্রথম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তবে কিছু অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের কারণে আলোচনা সাময়িকভাবে স্থগিত হয়।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে আলোচনা পুনরায় শুরু এবং এক বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।

এরপর দ্বিতীয় দফা আলোচনা ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকায়, তৃতীয় দফা ডিসেম্বরে টোকিওতে, চতুর্থ দফা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায়, পঞ্চম দফা এপ্রিল মাসে টোকিওতে, ষষ্ঠ দফা জুনে ঢাকায় এবং সপ্তম ও চূড়ান্ত দফা সেপ্টেম্বর মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়। সাত দফা আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশ ইপিএর পূর্ণাঙ্গ টেক্সট চূড়ান্ত করে।

আলোচনার দ্রুত অগ্রগতিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সরাসরি সম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাঁদের উদ্যোগে একাধিক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক এবং উচ্চপর্যায়ের আলোচনার আয়োজন করা হয়।

চুক্তি কার্যকর হলে স্বাক্ষরের প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশ ৭ হাজার ৩৭৯টি পণ্যে জাপানের বাজারে তাৎক্ষণিক শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। অপরদিকে, জাপান ১ হাজার ৩৯টি পণ্যে বাংলাদেশের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যও চুক্তি কার্যকরের দিন থেকেই জাপানের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। তৈরি পোশাক খাতে সিঙ্গেল স্টেজ ট্রান্সফরমেশন সুবিধাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সেবা বাণিজ্য খাতে বাংলাদেশ জাপানের জন্য ৯৭টি উপখাত এবং জাপান বাংলাদেশের জন্য ১২০টি উপখাত উন্মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। চারটি সরবরাহ পদ্ধতিতে এই সেবা সুবিধা কার্যকর হবে।

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের সঙ্গে এ ধরনের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি করতে যাচ্ছে।

নেগোশিয়েটর পর্যায়ের আলোচনা শেষ হলেও উভয় দেশের উপদেষ্টা পরিষদ বা ক্যাবিনেটের অনুমোদন এবং পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর চুক্তিটি কার্যকর হবে।

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More