ভাওয়াইয়া গানের রাজপুত্র খ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং সঙ্গীত বিষয়ক অধ্যাপক, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই।
শনিবার (১০ মে) ভোর সাড়ে পাঁচটায় রাজধানী একটি হাসপাতালে মুস্তাফা জামান আব্বাসী শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
সংবাদমাধ্যমকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে শারমিন আব্বাসী।
তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন মুস্তাফা জামান আব্বাসী। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আজ চিকিৎসারত অবস্থায় ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী মুস্তাফা জামান আব্বাসী উপমহাদেশের খ্যাতনামা সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা আব্বাসউদ্দীন আহমেদ ছিলেন পল্লিগীতির অগ্রপথিক। চাচা আবদুল করিম ছিলেন পল্লিগীতি ও ভাওয়াইয়া–ভাটিয়ালির জনপ্রিয় শিল্পী। বড় ভাই মোস্তফা কামাল আইন বিশারদ। তাঁর স্ত্রী আসমা আব্বাসী ছিলেন একজন প্রথিতযশা শিক্ষক ও লেখিকা।
১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের কোচবিহার রাজ্যের বলরামপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া আব্বাসী শৈশব কাটিয়েছেন কলকাতায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ, এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর হার্ভার্ড গ্রুপ থেকে মার্কেটিং বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেন।
মুস্তাফা জামান আব্বাসী রচিত অসংখ্য গ্রন্থের মধ্যে অন্যতম ‘লোকসঙ্গীতের ইতিহাস’, ‘ভাটির দ্যাশের ভাটিয়ালি’, ‘রুমির অলৌকিক বাগান’, উপন্যাস ‘হরিণাক্ষি’, স্মৃতিকথা ‘স্বপ্নরা থাকে স্বপ্নের ওধারে’।
‘বাংলা‘ সংস্কৃতিতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মুস্তাফা জামান আব্বাসী ‘একুশে পদক‘সহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছেন।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, লালন পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার, আব্বাসউদ্দিন গোল্ড মেডেল, এ্যাপেক্স ফাউন্ডেশন পুরস্কার, জাতীয় প্রেস ক্লাব লেখক পুরস্কার, সিলেট মিউজিক পুরস্কার, মানিক মিয়া পুরস্কার, নাট্যসভা উপস্থাপক পুরস্কার, বাংলা সন চৌদ্দশতবার্ষিকী পুরস্কার ইত্যাদি।
এসএ