৬ দফা পূরণের দাবীতে ফেনী সরকারি কলেজ ও সরকারি জিয়া মহিলা কলেজ সহ ৮টি সরকারি কলেজে কর্মবিরতি পালন করছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সদস্যরা।
সোমবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে শিক্ষকরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নেন। দাবীগুলো হলো– ক্যাডার কম্পোজিশন সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদ সৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন, আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসন ও পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় চালু।
ফেনী কলেজের কর্মসূচীতে সমিতির জেলা শাখার সভাপতি ও ফেনী সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম সরকার ছাড়াও কলেেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোক্তার হোসেইন, যুগ্ম–সম্পাদক জয়নাল আবদীন, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ আলী, কোষাধ্যক্ষ ওয়াসিম পাটোয়ারী, কলেজ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি কলেজের শিক্ষকগণ অংশ নেন।
সমিতি নেতৃবৃন্দ দাবী পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর তিনদিনের কর্মবিরতী পালন করা হবে বলে জানান।
সমিতির জেলা শাখার সভাপতি ও ফেনী সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী না মানায় হতাশায় নিমজ্জিত। অথচ এসব দাবী মানা হলে সরকারের অতিরিক্ত কোন টাকা খরচ হবে না। বিভিন্ন পেশাজীবী ক্যাডার পদোন্নতি সহ সম্মানজনক অবস্থানে থাকলেও শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। একজন শিক্ষক দীর্ঘদিন কর্তব্য ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও তারা সহযোগি অধ্যাপক হয়েই অবসর গমন করেন।
সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম সরকার জানান, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর শিক্ষাখাত। প্রাথমিক এমনকি মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও তার কার্যালয়ে রয়েছেন। অথচ কলেজ শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন কর্মকর্তা নেই। শিক্ষা ক্যাডারের এসব দাবী অনেক পুরনো। প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে এসব দাবীর অনেকগুলো আশ্বাস দেয়া হলেও আলোর মুখ দেখেনি।
সমিতি নেতৃবৃন্দ জানান, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে শিক্ষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে জনবলের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষা ক্যাডারে প্রাপ্যতা অনুযায়ী কখনোই পদ সৃজন করা হয়নি। ২০১৪ সালে ১২ হাজার ৪৪৪টি পদ সৃজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছরেও এ পদগুলো সৃজন হয়নি। ফলে দিন দিন বাড়ছে শিক্ষক সংকট। এর প্রভাব পড়ছে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থায়। কারণ শিক্ষক ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা প্রদান সম্ভব নয়। অন্যান্য ক্যাডারে চাকরির ৫ বছর পূর্তিতে ৯ম গ্রেড থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হলেও শিক্ষা ক্যাডারে তা দেওয়া হচ্ছে না। অনেকেই একই পদে ৮–১৩ বছর ধরে কর্মরত। পদোন্নতি না হওয়ায় অনেককে সামাজিকভাবে অমর্যাদাকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। তাই পদ সৃজন না হলে সুপার নিউমারির পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান তারা।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ