বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ফেনীতে সমাবেশে হামলা, গুলি– ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ও আহতদের দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় এজাহারভুক্ত ও সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে তাদেরকে ফেনীর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাতে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমাবেশে হামলার ঘটনায় জড়িত ও সন্দিগ্ধ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা হলেন– ফেনী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিরিঞ্চি এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে ৪টি হত্যা মামলার পলাতক আসামী ওসমান গনি লিটন (২৬), ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ৬ নং পশ্চিম বিজয়সিংহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহ আলম মিন্টু (৫৯), ফেনী পৌরসভার শান্তি কোম্পানি রোডের বাসিন্দা ও ১২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান দিদার (৪৫), ফুলগাজীর আমজাদহাট ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মামুন (৪২), আমজাদ হাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কালাম (৪২), একই ইউনিয়নের উত্তর ধর্মপুর গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী মো. আক্কাস আলী (৬৩), দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের আওয়ামী লীগের সমর্থক মো. নুব নবী (৬৩), সোনাগাজীর মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নং ওয়ার্ড স্বরাজপুর এলাকার মেম্বার মো. আমজাদ হোসেন কিরন (৪৩), সোনাগাজী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের (চর চান্দিয়া) কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. হেদায়েত উল্যাহ (৪০), পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি মো. মহি উদ্দিন চৌধুরী (৫০), ছাগলনাইয়া উপজেলার পশ্চিম দেবপুর গ্রামের আওয়ামী লীগের সমর্থক রবিউল হক (৬৫), একই গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী মো. শাহাদাত হোসেন (৩০), ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. শাহজাহান (৪৫), বালিগাঁও ইউনিয়নের হকদি গ্রামের যুবলীগের ইউনিয়ন দপ্তর সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (৩০) ও বালিগাঁও ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ছাত্র লীগের সহ–সভাপতি নুরুল করিম (২৩)।
ফেনী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্বজনদের দায়ের করা বিভিন্ন হত্যা মামলা, আহতদের মামলায় এজাহার ভুক্ত ও সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগষ্ট ফেনীর মহিপাল এলাকায় উড়ালসেতুর নীচে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলা, গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ শেষে পিটিয়ে ও কুপিয়ে শতাধিক ছাত্র জনতাকে আহত করে। ওই দিনই সেখানে হামলার ঘটনায় ৮ জন নিহত হয় এবং পরে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এসব হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের পক্ষ থেকে ফেনী সদর মডেল থানায় ৮ টি হত্যা মামলা দায়ের এবং আহতদের পক্ষ থেকে ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আবদুল্লাহ/ সুপ্তি/ দীপ্ত সংবাদ