‘ফিলিস্তিনি পেলে‘ হিসেবে পরিচিত ফুটবলার সুলাইমান আল–ওবেইদের মৃত্যুতে উয়েফার দেওয়া শোকবার্তার তীব্র সমালোচনা করেছেন মিশরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহ। উয়েফা এই ফুটবলারের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও তার মৃত্যুর কারণ, স্থান বা পরিস্থিতি নিয়ে নীরব থাকায় এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন, লিভারপুলের এই তারকা।
গাজায় খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় ইসরায়েলি হামলায় গাজার দক্ষিণে নিহত হয়েছেন ‘ফিলিস্তিনি পেলে‘ খ্যাত ফুটবলার সুলাইমান আল–ওবাই। সম্প্রতি, সুলাইমানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা–উয়েফা। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আল ওবেইদের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না করা এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ না করায় অনলাইনে সংস্থাটিকে প্রশ্ন করেছেন লিভারপুল ইজিপ্সিয়ান তারকা মোহাম্মদ সালাহ।
ওবেইদের মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট দেয়, ইউনিয়ন অব ইউরোপীয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। ফিলিস্তিনি ফুটবলারকে মেধাবী আখ্যা দেয়া হয় সেখানে। বলা হয়, অন্ধকার সময়েও অগণিত শিশুকে আশার আলো দেখিয়েছেন ওবেইদ। তবে এড়িয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের হামলার প্রসঙ্গ। আর এতেই ক্ষিপ্ত হন লিভারপুল স্ট্রাইকার মোহাম্মদ সালাহ।
এক্স হ্যান্ডলে উয়েফার পোস্ট শেয়ার দিয়ে সালাহ প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে, কোথায় এবং কেন মৃত্যু হয়েছে ওবেইদের। তবে এই ইস্যুতে বিভিন্ন গণমাধ্যম যোগাযোগ করলেও মন্তব্যে রাজি হয়নি উয়েফা কর্তৃপক্ষ।
৪১ বছর বয়সী আল–ওবেইদ তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১০০‘র–ও বেশি গোল করেন, যা তাকে ফিলিস্তিনি ফুটবলের অন্যতম উজ্জ্বল তারকায় পরিণত হিসেবে করেছিলো। ১৯৮৪ সালের ২৪ মার্চ গাজায় জন্ম নেয়া ওবেইদ, খাদামাত আল–শাতি ক্লাবের হয়ে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরে তিনি দখলকৃত পশ্চিম তীরের মারকাজ শাবাব আল–আম‘রি এবং গাজা স্পোর্ট ক্লাবেও খেলেন।
২০০৭ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর তিনি ফিলিস্তিনি দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন। ফিলিস্তিনি ফুটবল ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, তিনি ২৪ বার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমে দুটি গোল করেন, যার মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় ছিলো ২০১০ সালের পশ্চিম এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে একটি ‘সিসার–কিক‘ গোল।
ফিলিস্তিনি ফুটবল ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় ফুটবল সম্প্রদায়ের ৩২১ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে প্রায় বিরতিহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
পেলেস্টান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, গাজা ও পশ্চিম তীরজুড়ে স্টেডিয়াম, প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে শুরু করে জিম ও ক্লাবহাউসসহ ২৮৮টি ক্রীড়া স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত অথবা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে গাজায় ২৬৮টি স্থাপনা, পশ্চিম তীরে ২০টি। এগুলোর প্রায় অর্ধেক সরাসরি ফুটবলের সঙ্গে জড়িত ছিলো।
মোহাম্মদ হাসিব/এজে/দীপ্ত সংবাদ