জন্মলগ্ন থেকেই দুই পা বাঁকা। হামাগুড়ি দিয়ে তার বেড়ে ওঠা। বড় হওয়ার পর বাকা পায়ের কারনে রিকশার প্যাডেল চেপে রিকশা চালাতে পারতেন না। রিকশার চাকা থেমে যাওয়ার পাশাপাশি বৃদ্ধ বাবা–মা ও স্ত্রী–সন্তান নিয়ে সংসারের চাকাও বন্ধ হয়ে যায় তার।
বলছিলাম নোয়াখালী সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও ইউনিয়নের রাজিবপুর বুড় পুকুর পাড়ের হতদরিদ্র পরিবারের মো.জাফর মিয়ার ছেলে সুমনের কথা।
তার এমন জীবনের কথা শুনে মানবিকতার হাত বাড়িয়ে পাশে দাঁড়ায় সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ইসমাইল হোসেন। কিনে দিলেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা। আর আশ্রয়স্থলের জন্য দিলেন প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের ঘর।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধী সুমন মিয়াকে রিকশা উপহার দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
এদিকে প্রতিবন্ধী সুমন মিয়া বলেন, ইউএনও আমাকে থাকার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দিয়েছেন। আমি পরিবার পরিজন নিয়ে ওই ঘরেই বসবাস করছি। এখন আবার আমাকে রিকশা কিনে দিয়েছেন। আমি যতবারই উপজেলায় এসেছি তিনি আমাকে আর্থিক সাহায্য করেছেন। তিনি একজন মানবিক ইউএনও। তার কাছে আমি ও আমার পরিবার কৃতজ্ঞ।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইসমাইল হোসেন প্রতিবেদককে জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশা চালক সুমন মিয়ার এমন অবস্থা দেখে আশ্রয়নে ঘর দিয়েছি, জীবিকার জন্য আজ রিকশা উপহার দিলাম। অন্যের কাছে হাত না পেতে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তার মাথা গোঁজার নেই কোন জমি। সে প্রকৃত ভূমি ও গৃহহীন। প্রতিবন্ধী সুমন মিয়া ছোট থেকেই পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। ভিক্ষাবৃত্তির মানসিকতা না থাকায় তার পেশাকে আরও একটু সহজ করতে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে তাকে এটি উপহার দেয়া হয়েছে।
রিকশা উপহার দেওয়ার সময় তার বৃদ্ধ পিতা মো: জাফর, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জহিরুল হক, কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ