বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য ৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেবে জাপান। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাপান সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং আইওএম বাংলাদেশের মিশন প্রধান ল্যান্স বোনো এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
এই সহযোগিতার আওতায় তিন জেলার প্রায় ৫ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ, জীবিকা পুনরুদ্ধার এবং দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, জাপান সরকারের এই সহায়তা বাংলাদেশের বাস্তুচ্যুত জনগণের জীবনমান উন্নত করতে সহায়ক হবে। এটি শুধু জরুরি সহায়তা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই সমাধানের দিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জাপান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে দুর্যোগপ্রবণ জনগোষ্ঠীর সহায়তায় কাজ করে যাবে।‘
আইওএম বাংলাদেশের চিফ অব মিশন ল্যান্স বোনো বলেন, ‘গত বছর বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যা লাখো মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করেছে। আমরা পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাপান সরকারের এই সহায়তা আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর কাঠামোগত উন্নয়ন, আশ্রয় কমিটির সদস্যদের প্রশিক্ষণ, জীবিকা পুনরুদ্ধার এবং দুর্যোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।‘
জাপান সরকার গত সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ব বাংলাদেশে বন্যা–প্রবণ এলাকায় জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ও ইউনিসেফের মাধ্যমে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে। পাশাপাশি, জরুরি মানবিক সহায়তা হিসেবে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জাপান প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বরাদ্দ করেছে। এছাড়া, ঢাকায় জাপানি কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন এবং জাপানি অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে ২ লাখ টাকা বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে দান করেছে, যা বন্যাকবলিত পরিবারের সহায়তায় ব্যয় করা হবে।
জাপানের এই উদ্যোগ শুধু জরুরি সহায়তা নয়, বরং দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আইওএম ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে জাপান ভবিষ্যতেও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।