মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া ও আরিচা–কাজিরহাট নৌরুটে নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নৌরুটে যাত্রীবোঝাই যানবাহন নিয়ে মাঝ নদীতে প্রায় সময়ই আটকা পড়ছে ফেরি। নাব্যতা সংকটের কারনে পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরিগুলো আধা কিলোমিটার নৌপথ ঘুরে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করছে। ফলে এ দুটি নৌরুটে আগের তুলনায় যাত্রী ও যানবাহন কম থাকলেও ভোগান্তি বেড়েছে।
রাজবাড়ীগামী যাত্রী লিয়াকত হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে তেমন যানবাহন ও যাত্রী চাপ নেই। তবে সম্প্রতি নৌরুটে নাব্যতা সংকটের কারনে আধা কিলোমিটার পথ ঘুরে পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে সময় বেশি লাগছে। অনেক সময় মাঝ নদীতে ফেরি আটকা পড়ছে। ফেরি মাঝ নদীতে আটকা পড়লে ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়।
পাবনাগামী যাত্রী কাবুল মিয়া বলেন, আরিচা–কাজির নৌরুটে আগষ্ট মাস থেকেই নদীপথে ফেরি প্রায় সময় আটকা পড়ে। কয়েক জায়গায় ড্রেজিং করলেও ভোগান্তি তেমন একটা কমেনি। অনেক সময় ড্রেজিংয়ের কারনে ফেরি চলাচল ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ থাকে। ভোগান্তির শেষ নাই।
ট্রাক চালক সিয়াম হোসেন বলেন, আরিচা ঘাটে এমনিতেই ফেরি কম। গত কয়েক মাস ধরে প্রায় সময় নদীতে ফেরি আটকা পড়ে। আবার ড্রেজিংয়ের কারনে ফেরিগুলোও একটু ঘুরে চলাচল করছে। ফলে পারাপারে সময় বেশি লাগছে। কয়েক ঘন্টা ঘাট বন্ধ থাকলেই যানবাহনের সিরিয়াল লেগে যায়। তখন ভোগান্তি আরো বাড়ে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন ( বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বলেন, আরিচা–কাজিরহাট নৌরুটে চারটি টি রোরো ফেরির মধ্যে তিনটি ফেরি দিয়ে যানাবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। রুহুল আমিন নামের একটি ফেরি মেরামতে রয়েছে। এ নৌরুটে ফেরিগুলোকে ১৬ কিলোমিটার নৌ্পথ পাড়ি দিতে হয়। তবে নৌরুটে নাব্যতা সংকট থাকায় পারাপারে কিছুটা সময় বেশি লাগছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের ড্রেজিং বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) আক্কাস আলী বলেন, নৌরুটে ফেরি চলাচল করতে দশ ফুট গভীর পর্যন্ত পানি প্রবাহ থাকা প্রয়োজন। পদ্মা–যমুনা নদীর গভীরে পলি জমে নৌরুটে গভীরতা কমে যায়। গত জুলাই মাস থেকে আরিচা–কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত ড্রেজিং কার্যক্রম চলামান আছে। পলি অপসারন করতে এ নৌরুটে ৫ টি পয়েন্টে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এছাড়া পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে মাঝ নদীতে একটি পয়েন্টে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন ( বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ মো:খালেদ নেওয়াজ বলেন, পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া নৌরুটে ১১ টি রো রো (বড়), ৫ টি ইউটিলিটি ও ৩ টি ছোট ফেরি যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে রয়েছে। তবে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কম থাকায় এ নৌরুটে ৬ টি রো রো ( বড়), ৩ টি ইউটিলিটি ও ১ টি ছোট ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে চার কিলোমিটারের এ নৌরুটে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। নাব্যতা সংকটের কারনে ফেরিগুলোকে আধা কিলোমিটার নৌপথ ঘুরে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করতে হচ্ছে। এতে পারাপারে কিছুটা সময় বেশি লাগছে। তবে বাড়তি কোন ভোগান্তি নেই।
জাহিদুল চন্দন/ আল/ দীপ্ত সংবাদ