শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

নওগাঁ সদর উপজেলার ইলশাবাড়ি এলাকায় কম দামে ইট দেওয়ার কথা বলে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৫কোটি টাকা নিয়ে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ইটভাটা মালিক সবেদুল ইসলাম ওরফে রনির বিচারসহ পাওনা টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইলশাবাড়িচন্ডিপুর গ্রামের ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার সকালে নওগাঁরাণীনগর সড়কের ইলশাবাড়ির সুরমা ব্রিকস নামের ইটভাটা খলায় ভুক্তভোগী জনসাধারণ ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

ইলশাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী সাইদুর রহমানের (মিনকো) সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ভুক্তভোগী বেদারুল ইসলাম, চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. আলতাফ হোসেন, সদর উপজেলার মাদারমোল্লা খিদিরপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, ইলশাবাড়ী গ্রামের মোশাররফ হোসেন, বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার তারাপুর গ্রামের তপেস কুমার প্রমুখ।

ভুক্তভোগীরা জানান, বছরের কিছু সময় ইটের দাম বেড়ে যায়। অন্যান্য সময়ে কম দামে ইট পাওয়া যায়। ভাটা কর্তৃপক্ষকে অগ্রিম টাকা দিলে প্রতি হাজার ইটে দুইতিন হাজার টাকা কম পড়ে। ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩সালে বিভিন্ন সময়ে কম দামে ইট পাওয়ার চুক্তিতে সদর উপজেলার ইলশাবাড়ী এলাকায় পাশাপাশি অবস্থিত সুরমা ব্রিকস১ ও সুরমা ব্রিকস২ নামের দুটি ইটভাটার মালিক সবেদুল ইসলামকে ভুক্তভোগীরা অগ্রিম টাকা দেন। টাকা লেনদেনের রসিদ তাদের কাছে রয়েছে। কিন্তু নানা অজুহাতে নির্ধারিত সময়ে তাদেরকে ইট দেওয়া হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে ইট না পাওয়ায় অগ্রিম দেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে বারবার ধরনা দিয়েও ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেয়না সবেদুল ইসলাম। গত দুই মাস ধরে সদর উপজেলার ইলশাবাড়ী এলাকায় অবস্থিত সুরমা ব্রিকস১ ও সুরমা ব্রিকস২ টাকা ফেরত না দেওয়ায় অনেকে সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছেন।

আরও পড়ুন: সুবর্ণচরে ৭’শ ভূমিহীন পরিবারের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

ইলশাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমি সুরমা ব্রিকস১ ইটভাটা থেকে ৫৫হাজার ৬০০ইট কেনার জন্য সবেদুল ইসলাম রনিকে ৫লাখ ৪হাজার টাকা অগ্রিম দেই। গত বছরের ১অক্টোবর এই টাকা দেই। চুক্তি অনুযায়ী ১বছরের মধ্যে সব ইট দেওয়ার কথা। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত একটি ইটও পাইনি। গত দুই মাস ধরে ভাটা মালিক ও ম্যানেজার সবাই উধাও। ভাটার উৎপাদন কার্যক্রম। আমার মতো অগ্রিম টাকা দেওয়া অন্য পাওনাদাররা ভাটায় এসে মালিক কর্তৃপক্ষের কাউকে পাচ্ছে না। ইটভাটা মালিক সবেদুল ইসলাম ও তাঁর ম্যানেজার সবার মুঠোফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে গতকাল বুধবার আমরা জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি।’

আদমদিঘী উপজেলার তারাপুর গ্রামের বাসিন্দা তপেস কুমার বলেন, ‘কম দামে দেড় লাখ ইট কেনার জন্য তিন বছর আগে সুরমা ব্রিকস ইটভাটা মালিক সবেদুল ইসলাম ৭ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলাম। চুক্তি অনুযায়ী ১ বছরের মধ্যে সব ইটা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ইট পাইনি। বারবার ধরনা দিয়েও কোনো কাম হয়নি। গত দুই মাস ধরে দেখতেছি, ইটভাটাটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মালিক কর্তৃপক্ষের সব লোক উধাও। সবেদুল ইসলামকে অগ্রিম টাকা দিয়ে আমার এখন পরিবারপরিজন নিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। আমার মতো নওগাঁ সদর, রাণীনগর ও আদমদিঘী উপজেলার আরও অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ কম দামে ইট কেনার জন্য সুরমা ব্রিকস ইটভাটা মালিক কর্তৃপক্ষকে অগ্রিম টাকা দিয়ে ধরা খেয়েছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার ইটভাটার মালিক লাপাত্তা হয়ে যাওয়া সবেদুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ইটভাটা মালিক সবেদুল ইসলাম (রনি) নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার পাটিচরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান। সুরমা মাল্টিপারপাস কোঅপারেটি সোসাইটি লিমিটেড নামের তার মালিকানাধীন একটি সমবায় সমিতিও রয়েছে। সেই সমিতির অনেক শাখাও বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক স্থানে অর্থ ফেরতের দাবীতে সমিতির কার্যালয়ও ঘেরাও করার ঘটনাও ঘটেছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম. রবিন শীষ জানান এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

 

 


রিপন/ আল / দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More