নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে এবং এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এক নারী সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১১ জুন) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যগুলো নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারকৃত এক আসামির কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে একটি চাপাতি ও একটি ক্ষুর। দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনও পলাতক রয়েছে পাঁচ আসামি, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হচ্ছেন, বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের দিলিলপুর গ্রামের সওদাগর বাড়ির আবদুল মালেকের ছেলে আবদুর রব আবুল (৪০), সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামের সোলাইমান ভূঁইয়ার ছেলে মাকসুদুর রহমান (৩৮) ও মাকসুদুর রহমানের স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬)।
পুলিশ জানায়, শনিবার (১০ জুন) সকালে বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের টঙ্গীরপাড় গ্রামের একটি পুকুর পাড় থেকে চেয়ারে বসা অবস্থায় দুলাল চন্দ্র দাস নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহটির মাথা, মুখ ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিলো। পরে এ ঘটনায় সন্দেহজনক ভাবে আবদুর রব আবুলকে আটক করে পুলিশ। আটককৃত আবুলকে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে সে দুলাল চন্দ্র দাসকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে এবং যে অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে সেগুলোর তথ্য প্রদান করেন। আবুলের তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে তাকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর পলাতক আসামির বাড়ির পাশ্ববর্তী খাল থেকে একটি চাপাতি ও ক্ষুর উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি আবুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, মাছ ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র দাস আমাদের (আবুল এবং অপর আসামির) কয়েকটি অপরাধমূলক কাজ সংগঠনের সময় দেখে ফেলে। সবশেষ স্থানীয় কয়েকটি বিষয় নিয়ে দুলালের সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছিলো এসব ঘটনায় তারা দুলালকে হত্যার হুমকি দেয় এবং সেই থেকেই দুলালকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ভোরে দুলাল পুকুর পাড়ে চেয়ারে বসে মাছ পাহারা দেওয়া অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েছিলো। কিছুক্ষণ পরে আবুল ও অপর আসামি অর্তকিতভাবে দুলালের ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে আবুল ক্ষুর দিয়ে দুলালের গলা কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত দুলালের স্ত্রী বকুল রানী দাস বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে, গত ৩ জুন শনিবার সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের রথী গ্রামে জায়গা–জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এনামুল হক (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হত্যা করে একই বাড়ির সোলাইমান ভূঁইয়ার ছেলে মাসুদুর রহমান, মাকসুদুর রহমান, জেসমিন আক্তার, সুমি আক্তার, রুনু আক্তার ও সোলাইমান ভূঁইয়া। এ ঘটনা নিহতের ছেলে ওসমান গণি বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলার ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানকালে তথ্যপ্রযুক্তির ভিত্তিতে শনিবার রাতে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা এলাকায় থেকে মাকসুদুর রহমান ও পরে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থেকে সুমি আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের রবিবার দুপুরে বিচারিক আদালতের প্রেরণ করা হয়েছে। উভয় মামলায় পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে।
এ.এস.এম.নাসিম/আফ/দীপ্ত নিউজ