২০১৮ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর মহিউদ্দিন গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে নজির আহম্মদকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার ছেলে ইসমাইল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (৭ জুন) বিকেলে আদালতে আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে এই রায় প্রদান করেন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসমাইল হোসেন সুবর্ণচর উপজেলার দক্ষিণ চর মহিউদ্দিন গ্রামের মৃত নজির আহম্মদের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে প্রায় এক বছরের মতো বাড়ি ঘর ছেড়ে নিরুদ্দেশ ছিলেন ইসমাইল হোসেন। ওই এক বছর পরিবারের লোকজনের সাথে তার কোনো প্রকার যোগাযোগ ছিলো না। ঘটনার ১০/১৫ দিন আগে এক গভীর রাতে বাড়িতে আসে ইসমাইল। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট সকালে বাড়ির পাশ্ববর্তী কৃষি ক্ষেতে কাজ করছিলেন নজির আহম্মদ। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই ক্ষেতে এসে তার বাবা (নজির আহম্মদ) এর কাছে জমির ভাগ চায় ইসমাইল।
এনিয়ে তাদের মধ্যে বাকবির্তক হয়, এর এক পর্যায়ে নজির আহম্মদের হাতে থাকা কাজ করার লোহার শাবল (খন্তা) কেড়ে নিয়ে নজির আহম্মদের মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে ইসমাইল। মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ও রক্তক্ষরণ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন নজির আহম্মদ। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর ১টার দিকে মারা যান নজির আহম্মদ। পরে এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে আমেনা খাতুন বাদি হয়ে ইসমাইলকে আসামি করে চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাস্থল থেকে আটককৃত আসামি ইসমাইলকে ঘটনার পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালতের ১৬৪ ধারায় নিজের অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় আসামি।
মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, ঘটনাটি যেহেতু হত্যা আমরা আসামির মৃত্যুদণ্ড আশা করছিলাম। রায় ঘোষণার পর আসামিকে আদালত থেকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলায় আসামি পক্ষে কোন আইনজীবী না থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে (ডিফেন্স ল‘ইয়ার) হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট শিব নাথ ভৌমিক।
এ।এস।এম।নাসিম/ আল/দীপ্ত সংবাদ