রাজশাহীর দুই শিশু মুনতাহা মারিশা (২) ও মুফতাউল মাশিয়া (৫) অজ্ঞাত ভাইরাসে মারা গেছে। তাদের শরীর থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ঢাকায় পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন। রিপোর্টে উল্লেখ আছে, নিপাহ ভাইরাসে তাদের মৃত্যু হয়নি। কোন ভাইরাসে তাদের মৃত্যু হলো, সেটি নিশ্চিত হতে গবেষণা করা হবে।
মৃত দুই শিশুর বাবার নাম মনজুর রহমান হোসেন ও মায়ের নাম পলি খাতুন। তাদের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। মনজুর রহমান রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক। পরিবার নিয়ে তিনি ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারে থাকেন। দুই শিশুকে তাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় দাফন করা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, সকালেও ওই দম্পতিকে দেখেছেন। তাদের জ্বর আসেনি। তবে তারা দুটো বাচ্চাকেই কাছে রেখেছিলেন। শিশুদের মাধ্যমে মা–বাবার শরীরেও ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। এই আশঙ্কায় তাদের হাসপাতালে রাখা হয়েছে। পরীক্ষায় নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ফলে কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে গৃহকর্মী রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ থেকে বরই কুড়িয়ে এনে দুই মেয়েকে খেতে দিয়েছিলেন। না ধুয়েই ওই বরই খেয়েছিল মারিশা আর মাশিয়া। সেদিন তারা ভালই ছিল। একসঙ্গে খেলেছে। পরদিন বুধবার বেলা ১১টার দিকে ছোট মেয়ে মারিশার জ্বর আসে। বার বার পানি খাচ্ছিল। দুপুরের পর শুরু হয় বমি। তখন মেয়েকে নিয়ে তারা একটি মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর সিএমএইচ হাসপাতালে আসছিলেন। মাইক্রোবাসেও মারিশা বুকের দুধ খায়। সিএমএইচে নেওয়ার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, পেথ মধ্যে তার মৃত্যু হয়েছে। এরপর গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুরে নিয়ে মরদেহ দাফন করা হয়।
এরপর শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুর্গাপুরের বাড়িতে মাশিয়ারও জ্বর আসে। শুরু হয় বমি। দ্রুতই তাকে রাজশাহীতে সিএমএইচে আনা হয়। রাতে মাশিয়ারও পুরো শরীরে ছোপ ছোট কাল দাগ উঠতে শুরু করে। তা দেখে সিএমএইচের চিকিৎসকেরা মাশিয়াকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে রাত ৯টায় তাকে রামেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুতই আইসিইউতে ভর্তি নেন। পরদিন শনিবার বিকালে মাশিয়াও মারা যায়।
আদনান / আল / দীপ্ত সংবাদ